ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৯ ওয়ার্ড কাশিপুর গ্রামে গাঁজা সেবন নিষেধ করাই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃদ্ধের জীবন। বৃদ্ধ কে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বিছানায় বৃদ্ধ মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও সেবনকারীরা বহাল তবিয়তে যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সরজমিন খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায় বৃদ্ধ বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে, আর অঝোরে ঝরছে চোখের পানি। মুখে কোন ভাষা নেই। মুখের ভাষা যে গাঁজা সেবনকারীদের উল্টো পাল্টা পিটুনিতে হারিয়ে গেছে। বৃদ্ধের কি দোষ ছিল এই সমাজ বা রাষ্ট্রের কাছে, কেনই বা বকাটে গাঁজা সেবনকারীদের কবরস্থান গাঁজা সেবন নিষেধ করলেন।কেনই বা সমাজ কে মাদকের ছোবল থেকে বাঁচাতে বৃদ্ধ নিজের জীবন আজ মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করালেন এমনটাই হিসাব নিকাশ মেলানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিছানায় মৃত্যুর ঘন্টা পার করছেন পৌরসভার কাশিপুর গ্রামের বৃদ্ধ শহিদুল ইসলাম।
গত (২৬শে-সেপ্টেম্বর)মঙ্গলবার বেলা ১২ টার সময় পৌরসভার কাশিপুর গ্রামের বৃদ্ধ মোঃ শহিদুল ইসলাম ( ৬৫) পিতা মৃত আবুল হোসেন বিলে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় কাশিপুর গ্রামের সামাজিক কবরস্থানের পাশে বসে একই গ্রামের ১. মোঃ নুহান হোসেন (২২)পিতা মোঃ নায়েব আলী,মোঃ মানিক হোসেন (১৯) পিতা মোঃ রায়হান সহ কয়েকজন গাঁজা সেবন করছে।এলাকার বয়োবৃদ্ধ হিসেবে তাদের কে বলে,তোমরা কবরস্থানের পাশে বসে গাঁজা সেবন করবে না। এতে গাঁজা সেবন করলে আমি তোমাদের অভিভাবক গণের জানিয়ে দেব। তখন গাঁজা সেবন অবস্থায় গাজা কাটা লোহার বাটাল দিয়ে মানিক মাথার পিছনে আঘাত করে। নুহান তার হাতে থাকা জ্বলন্ত আগুন থাকা গাঁজার কলকি দিয়ে বাম চোখে আঘাত করে। এতে বৃদ্ধ শহিদুল ইসলাম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। শহিদুল কে মাঠে পড়ে থাকতে দেখে শাহেলা বেগম নামে একজন শহিদুলের বাড়িতে খবর দেন।খবর শুনে শহিদুলের পরিবারের সদস্যরা মাঠে যেয়ে দেখতে পারে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি তার ভাই মোঃ মহিদুল ইসলাম তাকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার পরিবর্তন না হলে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।সেখানেও কোন উন্নতি না হলে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৭ / ৯/২৩ থেকে ৫/১০/২৩ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে উন্নতি না হলে চলে আসেন বাড়ি । তার স্বজনরা বলছে মাথায় রক্ত জমে আছে যার কারনে রোগীর বমি হয়েই যাচ্ছে। সে এখন মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থান করে আছে। শহিদুলের স্ত্রী আর্তনাদ করে সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী কি অপরাধ করেছিল যার কারনে এভাবেই আজ শেষ করে দিল। আমি গরীব মানুষ আমার স্বামী যতটুকু কাজ করতে পারতেন তাই দিয়ে কোন রকম চলেছে সংসার। শহিদুলের ভাই জানান,ডাক্তার বলেছে যদি মাথার রক্ত জমাট বাঁধা না ঠিক হয়।তাহলে অপারেশন করে বের করতে হবে। অপারেশন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন কি দিয়ে অপারেশন করবো।উল্টো আমাদের মেরে আবার আমাদের নামেই অভিযোগ দায়ের করেন,নুহানের পরিবার। আমি বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর মডেল থানা অভিযোগ দায়ের করেছি। পরবর্তীতে আমার ভাইয়ের ছেলে মোঃ জাকির হোসেন (২৫) বাদী হয়ে ঝিনাইদহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ছোট-বড় একাধিক সুত্রে জানাযায়, কাশিপুর গ্রামের বৃদ্ধ শহিদুল ইসলাম খুবই নিরীহ একজন ভালো মানুষ। তার কখনো কোন দিন গোলযোগ করতে শুনিনি এবং দেখিনি।যাঁরা এই গাঁজা সেবন করে তারা নেশাখোর। নেশা অবস্থায় এভাবেই রক্তাক্ত জখম করেছে। সুত্র আরও জানান যদি গাঁজা সেবন করার কথা বলা হয় তাহলে আমাদের জীবন বাচানো কষ্ট হয়ে যাবে।তাহলে কি আজ এই গাঁজা সেবনকারীদের নিকট সমাজ ও সমাজের মানুষ গুলো জিম্মি হয়ে থাকবে এমনটাই মনে করেন সমাজের সাধারণ মানুষ।