আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার 'ফোর সিজন এগ্রো ফার্মের স্বাত্তাধিকারী ও সৌখিন উদ্যোক্তা তালহা জুবায়ের চলতি মৌসুমে প্রথম বারের মতো তিন একর টিলা ভূমিতে মিষ্টান্ন মাল্টা ও কলার সাথে ৫০৩০ বস্তায় আদা চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলার তিনটহরী কৃষি ব্লকে গড়ে উঠা "ফোর সিজন এগ্রো ফার্ম" এর এই স্বপ্নদষ্টা বলেন, ফোর সিজন এগ্রো ফার্ম এর কাজ পরিচালনা ও রক্ষণাবক্ষেণে দু'জন স্টাফ রয়েছে। প্রতি মাসে তাদের বেতন ভাতা বাবদ ২৫,০০০ টাকা। বছরে তিন লক্ষ টাকা। ফার্ম এর আয় থেকে তাদের বেতন ভাতা পরিশোধের উপায় খুঁজছিলাম। একদিন বস্তায় আদা চাষ বিষয়ে ইউটিউবে একটি প্রতিবেদন দেখে এবং বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর মো. আশিকুল ইসলামের বস্তায় আদা চাষ বিষয়ে বক্তব্য শুনে আমি অনুপ্রাণিত হই। পরবর্তীতে এই কৃষিবিদের সাথে যোগাযোগ করে তাঁর নির্দেশনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে ৫০৩০টি বস্তায় আদা চাষ শুরু করি। আমার এই স্বপ্নপূরণে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথ নিয়মিত প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন। এই এগ্রো ফার্মের ৩ একর টিলা ভূমিতে ১০০০ মিষ্টান্ন মাল্টা গাছ ও ৫০০ কলা গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৫০৩০ বস্তায় আদা রোপন করি। প্রতি বস্তায় ১২/১৪ কেজি মাটি, ৫ কেজি গোবর, ১ কেজি বালি, ১কেজি কাঠের গুড়ো ও পরিমাণ অনুযায়ী টিএসপি ,ইউরিয়া, পটাশ, ডিএপি, ফুরাডন,জিংক, বোরন মিশিয়ে ১৫/৩০ দিন বস্তার মুখ ঢেকে একেকটি বস্তায় ২/৩টি আদা রোপে দেই। বীজ আদা ১৫০ টাকা কেজিতে ২৬০ কেজি আদা ৫০৩০ বস্তায় লাগানো হয়েছে। আদা লাগানো থেকে উঠানো পর্যন্ত প্রতি বস্তায় ব্যয় ৬০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। গড়ে দেড় থেকে ২কেজি আদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আশা করছি।
ওই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার নাথ বলেন, উপজেলায় মাল্টা ও কলা গাছের ফাঁকে ফাঁকে ছায়া ও রোদময় জায়গায় ৫০৩০ বস্তায় আদা চাষ এই প্রথম এবং রেকর্ড! এই সৌখিন উদ্যোক্তার আগ্রহ দেখে চাষ ও রোগ, বালাই প্রতিরোধে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তাকে নিয়মিত শলা পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি আদার বাজার দর ভালো হলে তিনি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবেন। উপজেলা এবং জেলার প্রান্তিক কৃষকের জন্য তা হবে অনুকরণীয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান পার্বত্যকন্ঠ'কে বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আদা চাষ হয়েছে ২৮০হেক্টর। দু'একজন কৃষক ছোট পরিসরে বস্তায় আদা চাষ করলেও তালহা জুবায়ের মতো কেউই এত বড় পরিসরে বস্তায় আদা চাষ করেনি। বস্তায় আদা চাষ একবার রপ্ত করতে পারলে সহজ ও কম খরচে লাভবান হওয়া সম্ভব। উপজেলায় সৃজিত মোট ৪২৬৮ হেক্টর স্থায়ী ফল বাগানের মধ্যে মাল্টা, লেবু ও কলা বাগানে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিসহ কৃষকের লাভবান হবে। যা দেশীয় চাহিদা পূরণসহ রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।
কৃষি বিভাগ সব সময় প্রান্তিক কৃষকদের এ ধরণের উদ্যোগ ও অনুকরণীয় কাজে সার্বিক সহযোগিতা ও রোগ বালাই প্রতিরোধে কৃষকদের কাছে গিয়ে সেবা দিয়ে থাকেন।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত