বান্দরবানের লামায় সাদিয়া মনি নামে ৫ বছরের এক রোহিঙ্গা শিশুকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দুর্গম বাশঁখাইল্যাঝিরি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খুনের ঘটনায় স্থানীয়রা নিহতের প্রতিবেশী আরেক রোহিঙ্গা শিশু মোঃ হেলাল (১৩) কে রক্তাক্ত দা সহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
নিহত শিশু সাদিয়া মনি বাশঁখাইল্যাঝিরি গ্রামের রোহিঙ্গা মোঃ ইদ্রিস ও আজিদা বেগমের মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে সাদিয়া মনি বড়। খুনের দায়ে আটক অপর রোহিঙ্গা শিশু মোঃ হেলাল (১৩) একই গ্রামের নবী হোসেন ও নাছিমা বেগমের ছেলে। তারা উভয়ে প্রতিবেশী।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নাইমুল হক বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ৫ বছরের শিশু নিহত সাদিয়া মনিকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। খুনের কাজে ব্যবহৃত রক্তাক্ত দা সহ স্থানীয়রা অভিযুক্ত শিশু মোঃ হেলাল কে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। নিহতের শরীরে ৬/৭টি দায়ের কুপের চিহ্ন রয়েছে। গলার সামনে ও পিছনে কুপানো হয়েছে। শিশুটির গোপন অঙ্গে ধর্ষণের চেষ্টার আলামত রয়েছে। নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে শিশুটিকে।
তিনি আরো বলেন, শিশুটির সুরতহাল করা হয়েছে। লাশ দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। ধারনা করা হচ্ছে ধর্ষণের ঘটনা লুকাতে বা ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুপিয়ে শিশুটিকে খুন করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
নিহতের বাবা মোঃ ইদ্রিস ও মা আজিদা বেগম চিৎকার করে কান্না করতে করতে বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে মেয়েটি হেলালের (অভিযুক্ত শিশু) বোনের সাথে উঠানে খেলছিল। কিছুক্ষণ পরে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিক ওদিক খুঁজে না পেয়ে খুঁজতে বাড়ির পাশের পাহাড়ের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন দেখি মোঃ হেলাল দা হাতে পাহাড় থেকে নেমে আসছে। আমি সামনে গিয়ে দেখি জঙ্গলের ভিতরে আমার মেয়েকে কুপিয়ে খুন করে ফেলে রেখেছে। খুনের কাজে ব্যবহৃত দা টি হেলালদের। আমার পাশাপাশি ঘরে থাকি। নবী হোসেনের পরিবারের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নাই। আমি আমার অবুঝ শিশু হত্যার বিচার চাই। আমরা গরীব মানুষ, আমরা বিচার পাবো তো ?
বাশঁখাইল্যাঝিরি গ্রামের সর্দার আকতার হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলের পাশ থেকে হেলাল কে আটক করা হয়। উদ্ধার হওয়া রক্তাক্ত দা’টি হেলালদের। আমরা সবাই মিলে ছেলেটিকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিই। ডাক্তারের কাছে নেয়ার জন্য মেয়েটিকে পাহাড় থেকে নামিয়ে আনি। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরে লাশটি গ্রামের সর্দার আকতার হোসেনের উঠানে রাখা হয় এবং পুলিশকে লাশটি বুঝিয়ে দেই।