খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ব্যবসায়ী আবুল বাশার হত্যাকান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে দুই খুনি আব্দুস সালাম ও আনোয়ার হোসেন।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ব্যবসায়ী মো: আবুল বাশার হত্যাকান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে গ্রেফতারকৃত দুই খুনি মো: আব্দুস সালাম ও আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগর। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার স্বীকার করে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য দেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ। মূলত পাওনা সাড়ে তিন লাখ চাইতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হন ব্যবসায়ী মো: আবুল বাশার। হত্যার পর আবুল বাশারের লাশ গুমের চেষ্টা করা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ।
নিখোঁজের এক দিন পর গত ২৮ মে বাড়ী থেকে প্রায় এক কিলো মিটার দুরে পাশে পাহাড়ের গভীর খাদ থেকে মো. আবুল বাশারের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আবুল বাশারের ছোট ভাই আবুল কালাম অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মাটিরাঙা থানায় মামলা করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, কয়েক মাস আগে ব্যবসায়ী মো: আবুল বাশারের কাছ থেকে ব্যবসা করার কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকার ধার নেয় প্রতিবেশী আব্দুল সালাম। কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ায় দুই জনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
আবুল বাশারকে গল্প করার কথা বলে নিজের মুরগীর খামারে ডেকে নেয় আবদুস সালাম। এক পর্যায়ে আবদুস সালাম থেকে নিজের পাওনা সাড়ে তিন লাখ টাকা চাইলে আবুল বাশারের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুস সালাম প্রথমে লাঠি দিয়ে আবুল বাশারের মাথায় আঘাত করেন। পরে গলায় দড়ি পেচিয়ে ধরে। এরপর অপর সহযোগী স্থানীয় মোঃ আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগরের সহায়তায় কাঠের বল্লিতে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে মূল ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে নিহত আবুল বাশারের বাড়ীর পাশ্বে খাদে মরদেহ ফেলে দায়ের উল্টো দিক দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর তারা পুনঃরায় খামারে ফিরে এসে ঘটনায় ব্যবহৃত আলাম ধ্বংস করে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, তার সার্বিক দিক নির্দেশনায় অফিসার ইনচার্জ মাটিরাঙ্গা থানা মুহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার অজ্ঞাতনামা আসামীদের ঘটনার ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মামলাটির আসামী অজ্ঞাত হলেও পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগরকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তিতে অপর হত্যাকারী আব্দুল সালামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যাহৃত আলামতও উদ্বার করা হয়।
এদিকে হত্যাকারীরা নিজেদের আড়াল করার জন্য আবুল বাশারের লাশ উদ্বার, ময়না তদন্ত ও জানাযায়ও অংশ নেয় বলেও জানান পুলিশ সুপার।