বান্দরবানের লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জের আওতাধীন ‘বমু ফরেস্ট রিজার্ভের’ দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে থাকা ৬ একর জায়গা দখলমুক্ত করেছে বন বিভাগ। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত লামা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জায়গা দলখমুক্ত করার অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বমু রিজার্ভ ফরেস্টের অহিদ্দারঘোনা এলাকার পানিস্যামূখ নামক স্থানে বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জায়গা নিয়ে দু’পক্ষ বিবাদে জড়িয়ে পড়ে এবং আইন-শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। তাই আমরা সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে চারা রোপন করেছি। দখলমুক্ত করা ৬ একর জায়গায় আজ চিকরাশি, কাঞ্চনবাদি, অর্জুন, আকাশমনি প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার দীর্ঘমেয়াদী বনজ গাছের চারা লাগানো হয়েছে। এছাড়া জবরদখল থেকে মুক্ত করে বিরোধীয় জায়গায় লাল পতাকা দিয়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার রহিত করা হয়েছে। বন বিভাগের জবরদখল করা জায়গা দখলমুক্ত করার অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বমু ফরেস্ট রিজার্ভ ২৫ এপ্রিল ১৯৩১ সালে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে বমু রিজার্ভ ফরেস্ট সৃজিত হয়। ২০০৫ সালে বমু রিজার্ভ লামা বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সংরক্ষিত ও রক্ষিত মিলে এই রিজার্ভের মোট আয়তন ২০১৯.৭৮ একর। বিভিন্ন মূল্যবান গাছের মাদার ট্রি’র জন্য বমু রিজার্ভ বিখ্যাত। এখানে শতবর্ষী গর্জন, তেশল, চাপালিশ, বয়েরা বৈলআম ও রং গামারী গাছ আছে। এছাড়া ২৫০ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে মূল্যবান আগর বাগান।
জানা যায়, বমু রিজার্ভের অহিদ্দারঘোনা এলাকার ভিলেজার আবুল কাসেম এর ভাই ছৈয়দ আলম ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে এই জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ মিজানের এই জায়গার উপর লুলুপদৃষ্টি পড়ে। সে এই জায়গা জবরদখল করতে গেলে বিরোধের সৃষ্টি হয়। উক্ত মিজান মেম্বার ভুয়া ও জাল ক্রয়-বিক্রয় দলীলসৃজন করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জায়গা নিজের দাবী করে। বিষয়টি অবগত হয়ে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরিফুল হক বেলালের নির্দেশে জবরদখল হতে রিজার্ভের জায়গা দখলমুক্ত করতে অভিযান চালায়।
দখলমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম, লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহি, তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কাসেম, ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম রেজাউল ইসলাম, বমু বিট কর্মকর্তা অঞ্জন কান্তি বিশ্বাস, সরই কেয়াজুপাড়া বিট কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন, লামা জোত মালিক সমিতি সভাপতি মোঃ সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুণ-অর রশিদ, বমু বিলছড়ি ৪নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার মোঃ বেলাল সহ প্রমূখ। এসময় গণমাধ্যমকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সামাজিক বনায়নের সুবিধাভোগী লোকজন উপস্থিত ছিল।
লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহি বলেন, অভিযান চালিয়ে জবরদখলকৃত বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। একাজে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, স্থানীয় লোকজন সহায়তা করেছে। দখলমুক্ত জায়গায় দীর্ঘমেয়াদী বনজ গাছের চারা লাগানো হয়েছে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত