তুরস্কে বাস করা একটি পরিবারের মানুষের হাঁটাচলার ধরন মানুষের বিবর্তন নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করেছে। উলাস পরিবারের কিছু সদস্য চার হাত-পায়ে হাঁটে, যা আগে পূর্ণ বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়নি। এই অস্বাভাবিক আচরণটি প্রথম ২০০৬ সালে বিবিসির একটি ডকুমেন্টারিতে নথিভুক্ত হয়। ‘দ্য ফ্যামিলি দ্যাট ওয়াকস অন অল ফোরস’ শিরোনামের ওই ভিডিওটিতে উঠে এসেছে, পরিবারটির সদস্যরা তাঁদের হাতের তালু ব্যবহার করে ভাল্লুকের মতো হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করছে।
পরিবারটি সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের (এলএসই) অধ্যাপক হামফ্রে-কে উদ্ধৃত করে বিবিসি বলেছে, চার বোন ও এক ভাই অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নিয়েছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে, পরিবারটির এমন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ষষ্ঠ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসি যত বড়ই হোক, আমি এটা ভাবতেই পারি না যে মানুষ কোনো না কোনোভাবে আবার পশুর দশায় ফিরে যেতে পারে।
সিক্সটি মিনিট অস্ট্রেলিয়াকে ড. হামফ্রে আরো জানালেন, ভাষা ও অন্য সব জিনিস তো আছেই, তবে অন্য সব প্রাণীর কাছ থেকে আমাদের যেটা আলাদা করেছে সেটা হলো— আমরা মাথা উঁচু করে দুই পায়ে হাঁটতে পারি। ‘অবশ্যই, এটি ভাষা এবং অন্যান্য সমস্ত ধরনের জিনিসও। তবে প্রাণীজগতের অন্যদের থেকে আলাদা বলে আমাদের অনুভূতির জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লোকগুলো (উলাস পরিবার) সেই সীমানা অতিক্রম করেছে।‘ যোগ করেন এই বিশেষজ্ঞ।
লিভারপুল ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, আক্রান্ত শিশুগুলোর মস্তিষ্কে নিউরোলজিক্যাল পরীক্ষায় দারুণ কিছু ধরা পড়েছে। দেখা গেছে তাদের মগজের সেরিবেলাম অংশের মধ্যের অংশটা বেশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। আর কারো ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেরিবেলামের ওই অংশটাই নেই।
প্রফেসর হামফ্রে পরে নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেছিলেন, একজন ফিজিওথেরাপিস্ট এবং সরঞ্জাম ব্যবহারের ফলে তাঁদের মাত্র দুই পায়ে হাঁটতে সাহায্য করেছিল। এতে তাঁদের হাঁটার গতিশীলতার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছিল।