দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জন ঢাকার এবং ৬ জন ঢাকার বাইরের। এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে মোট প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৯ জনে। একই সময়ে আরও ২ হাজার ২৯১ জন নতুন রোগী।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।
একদিনে রাজধানীর হাসপাতালে ৯২০ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩৭১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়ালো ১ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ জনে। আর বর্তমানে সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৮ হাজার ২১৮ রোগী। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ১ লাখ ১০ হাজার ৩৪৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সরকারি পরিসংখ্যান গত ২৪ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
দেশে ২০০০ সালে প্রথম ডেঙ্গু রোগীর তথ্য সংরক্ষণ শুরু হয়। সে বছর ৯৩ জন ডেঙ্গুতে মারা যান, শনাক্ত হয়েছিলেন ৫ হাজার ৫৫১ জন।
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছিল গত বছর। চলতি বছর অনেক আগেই সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত মাসেই ডেঙ্গুতে ২০৪ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৭ জন ও ২০২১ সালে মারা যান ১০৫ জন।
এদিকে, ডেঙ্গু রোগীদের চাপে হিমশিম অবস্থা কিছুটা কেটেছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে। তবে ডেঙ্গু পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। নগরবাসীর অভিযোগ, মশক নিধনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই সিটি করপোরেশনের।
চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমানে ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরের রোগী হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার রোগী কিছুটা কমলেও তাতে স্বস্তির কিছু নেই।
মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, “বর্তমানে ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরের রোগী হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছে। তবে ডেঙ্গুর লক্ষণে তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি। এখনো জটিল হচ্ছে রোগীর শারীরিক অবস্থা”।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, “ঢাকার রোগী কিছুটা কমলেও তাতে স্বস্তির কিছু নেই। সামনের দিনগুলোতে আবারো পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা রয়েছে। এখনো যেহেতু বর্ষা শেষ হয়নি তাই মশক নিধন কার্যক্রম আরও জোরদার করার দরকার”।