আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি)
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার প্রাচীন জনপদ যোগ্যাছোলা। ১৯৬৫ সালে এখানে প্রথম আবিষ্কার হয় সেমুতাং গ্যাসক্ষেত্র।
গ্যাসক্ষেত্রের কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হলেও নানা কারণে গ্যাসক্ষেত্রটি দীর্ঘ প্রায় চার দশক গ্যাস উত্তোলন বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ২০০৯ সাল থেকে পুরোদমে এই সেমুতাংয়ের গ্যাস সরাসরি জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ হচ্ছে। কিন্তু আলোর নীচ বরাবরই থাকছে অন্ধকারে! এখানকার মানুষ স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ পেতে অনেক আন্দোলন, সংগ্রাম করেও বিদ্যুৎ সুবিধা এতকাল পায়নি। সম্প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এলাকা বিদ্যুতায়ণের খাগড়াছড়ি সাংসদের হস্তক্ষেপে তাদের কাংখিত দাবী আদায়ে সক্ষম হয়। শুরু হয় দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার জনপদে বিদ্যুৎলাইন সম্প্রসারণের কাজ। যা এখন শেষ পর্যায়ে। আগামী ২৭ আগস্ট বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করবেন খাগড়াছড়ির সাংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এ খবরে জনপদে এখন খুশির বন্যা।
উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগ ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রাচীন জনপদ যোগ্যাছোলা এলাকাটি গত ছয় দশক ধরে অন্ধকার! ১৯৬৫ সালে যোগ্যাছোলার সেমুতাং গ্যাসফিল্ডে প্রথম গ্যাস আবিষ্কৃত হয়। এই গ্যাসফিল্ডের গ্যাস গত এক যুগ ধরে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্যাসফিল্ডের অফিসিয়াল কাজে বাপেক্স কর্তৃপক্ষ গ্যাস ব্যবহার করলেও এখানকার মানুষ তা শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে স্বাদ মিঠাচ্ছে! এ যেন আলোর নীচে অন্ধকার! এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করার দাবীতে এই জনপদে বহুবার মিছিল, সমাবেশ হলেও স্থানীয়দের ভাগ্যে এ যাবৎকালে বিদ্যুৎ জুটেনি! ফলে সম্প্রতিকালে সদ্য বিদায়ী ইউপি চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন ও এলাকার কৃতিসন্তান, যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আ.লীগ সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন জনপদে বিদ্যুতায়ণের দাবী আদায়ে সাংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সহযোগিতায় বিষয়টি পার্বত্যমন্ত্রণালয় হয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আলোরমূখ দেখে।
শুরু হয় গাড়িটানাস্থ ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইন থেকে দীর্ঘ ৮কিলোমিটার সেমুতাং গ্যাসফিল্ড পর্যপ্ত বিদ্যুতায়ণের কাজ। আগামী ২৭ আগস্ট বিকেলে এই প্রাচীন জনপদে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করবেন খাগড়াছড়ির সাংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এ যেন বাঁধভাঙা জোয়ার সমান আনন্দের খবর। এলাকার প্রবীন মুরব্বি আলহাজ্ব মো. আবদুল হামিদ সরকার বলেন, যোগ্যাবাসী আসলে অভাগা! সেই ১৯৬৫ সালে এখানে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। গত ১যুগ ধরে এখানাকার গ্যাস জাতীয় গ্রীডে যাচ্ছে । অথচ আমরা অন্ধকারে! যাক দশকের পর দশক পেরিয়ে অবশেষে এলাকায় বিদ্যুতায়ণের খবর নিঃসন্দেহে আনন্দের ও খুশির।
ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল মতিন বলেন, এই জনপদে বিদ্যুতের দাবী কয়েক দশকের পুরনো। সম্প্রতি সময়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীনসহ আমরা জনপদে বিদ্যুৎ সুযোগের দাবী নিয়ে খাগড়াছড়ির সাংসদ সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা আ.লীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সরনাপন্ন হই। এর পর মাননীয় সাংসদের আন্তরিকতায় বিষয়টি দ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন হয়।
উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য মো. মাঈন উদ্দীন বলেন, আগামী ২৭ আগস্ট যোগ্যাছোলা ইউনিয়ন আ. লীগের উদ্যোগে আয়োজিত শোক সমাবেশে খাগড়াছড়ির সাংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উপজাতি শরণার্থী বিষয়ক ট্রাক্সফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপজেলার প্রাচীন ও বিদ্যুৎ সুবিধাবঞ্চিত এলাকা যোগ্যাছোলায় বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন উদ্বোধন করবেন।
উপজেলা আবাসিক বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে ঠিকাদার ৮ কিলোমিটার সড়কে ১১ কেভি'র বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণ কাজ শেষ করেছে। তবে পুরোপুরি কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগবে। এমপি মহোদয় শোক সমাবেশে আসার কারণে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করবেন। আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে যোগ্যাছোলাবাসী।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত