ফরিদপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাবিকে কুপিয়ে হত্যার পর মোড়ের দোকানে বসে কলা খাচ্ছিলেন রব মিয়া (৭০)। খবর পেয়ে বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল জানান, বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে শহরের কমলাপুরের লালের মোড় থেকে রব মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি জানান, ফেসবুকে দোকানে বসে রব মিয়ার কলা খাওয়ার ভিডিও দেখতে পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালায়।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে কমলাপুর লালের মোড় এলাকার একটি বাড়িতে বড় ভাই রাজা মিয়ার স্ত্রী মাজেদা পারভিনকে (৪৩) চাপাতি দিয়ে খুন করেন রব মিয়া। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় রব মিয়াকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে রুহুল আমীন।
রুহুল আমিন বলেন, ‘চাচা আব্দুর রব জমি বিক্রি করেন আমাদের কাছে। অনেক আগেই তার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি আবারো কিছু টাকা দাবি করেন। দিতে না পারায় হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যা করেন।’
জানা যায়, শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার বাসিন্দা রাজা মিয়ার স্ত্রী মাজেদা পারভিনকে (৪৩) বাড়িতে ঢুকে অতর্কিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করে তার স্বামীর সহোদর আব্দুর রব মিয়া (৭০)। পরে চাপাতি পুকুরে ফেলে পালিয়ে যান তিনি। মাজেদা পারভিনের মাথায় কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
রাজা মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া আছিয়া বেগম বলেন, ‘হঠাৎ আর্তচিৎকার শুনে এসে দেখি বাড়িওয়ালার স্ত্রীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে বিছানায় ফেলে রেখেছে। পরে আমার চিৎকার শুনে অন্যরা আসে।’
রাজা মিয়া বলেন, ‘আমি নামাজ পড়ছিলাম। ঘরের সামনে এসে আমাকেও চাপাতি দিয়ে কোপাতে যায় রব। তখন আমি ঘরের সিটকেনি মেরে বাঁচি। পরে চলে যাওয়ার সময় পুকুরে চাপাতি ফেলে যায় রব।’
জানা গেছে, রাজা মিয়া পরিবার নিয়ে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে। তার ছোট ভাই রব মিয়া তাদের পাশেই থাকতেন। পাঁচ মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে রব মিয়ার স্ত্রী অনেক আগেই তাকে ছেড়ে চলে যান। সেই থেকে তিনি একাই থাকেন। আর তাদের আরও একজন ছোট ভাই ছিলেন, যিনি আগেই মারা গেছেন। ওই ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী ও তার পরিবারও পাশেই থাকেন। সম্পত্তি বেচাকেনা নিয়ে তাদের মাঝে এই বিরোধ বাধে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর বুধবার দুপুরে একটি ভিডিও পোস্ট করেন মুন্সি হাবুল জোবার্গার নামে এক ব্যক্তি। সেখানে বেলা ১১টার দিকে রব মিয়াকে দোকানে বসে কলা খেতে দেয়া যায়। পালাওনি কেন জানতে চাইলে রব মিয়া ভিডিওতে তাকে বলেন, ‘ওই ব্যাটা আমি খুন করছি, পলাবো ক্যা? রব বলেন, পলাবো না, আমি শাহেন শাহ্।’
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। বুধবার দুপুরে আসামি রব মিয়াকেও গ্রেফতার করা হয়।