• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল বেলকুচি উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে নিজকে গড়ে তুলে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভুমিকা রাথতে হবে -বাবুল দাস কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে লজ্জাবতী বানর অবমুক্ত কাপ্তাই বিএসপিআই শিক্ষার্থীদের ওপর ফের হামলা, ৪ জন আহত এম কে বাঘাবাড়ী ঘি কোম্পানির উৎপাদনকারী মো: কামাল উদ্দিনের ১ বছরের কারাদণ্ড কোটা সংস্কারের দাবিতে  কাপ্তাই বিএসপিআই এ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল দিনেদুপুরে কৃষকের বাড়িতে হামলা লুটপাট রাঙামাটি সদর জোনের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান আলীকদম সেনা জোন কর্তৃক মানবিক সহায়তা প্রদান পানছড়ি মাদ্রাসায় অব্যবস্থাপনা ও অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন খাগড়াছড়িতে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ফরিদপুরে থানা ও উপজেলা অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহত ১

কামরুল হাসান জুয়েল, ফরিদপুর থেকে: / ৪৮৫ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১

ফরিদপুরের সালথায় লকডাউন চলাকালে ফুকরা বাজারে এ্যাসিল্যান্ডের এক সহকারীর লাঠিপেটার গল্পকে কেন্দ্র করে সালথা থানা ও উপজেলা পরিষদের সরকারী প্রায় সব অফিস ও বাসায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। হামলাকারীরা ইউএনও ও এ্যাসিল্যান্ডের গাড়ী সহ কয়েকটি মটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়। একই সাথে হামলাকারীরা উপজেলার ভিতর থেকে বস্তায় বস্তায় করে বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। পুলিশ আর্ত রক্ষার্থে গুলি চালালে রামকান্তপুর এলাকার জুবায়ের হোসেন(১৮) নামে এক যুবক নিহত হয়। নিহত জুবায়ের উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের আশরাফ আলী মোল্যার ছেলে। এসময় গুলিবৃদ্ধ হয় আরো তিন থেকে চারজন। তাদেরকে ঢাকা ও ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন আমির, মিরান ও মামুন। এলাকার একজন হুজুরকে ধরে নিয়ে গেছে এবং তাকে মেরে মেলেছে এই গুজব রটিয়ে হামলা করা হয়েছে বলে সরোজমিনে গিয়ে জানাযায়। সোমবার সকালে ইউএনও এর বাসভবনে গিয়ে দেখা যায় নতুন পাওয়া ইউএনও ও এ্যাসিল্যান্ডের গাড়ী দুটির ভিতর থেকে ধোয়া বের হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ এলাকা নিস্তব্ধ এক পোড়াঁ গন্ধ ভেসে আসছে বাতাসে। উপজেলার প্রতিটি দপ্তরের রুমে হামলাকারীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। এর ভিতর সবচেয়ে ক্ষতি সাধন করা হয়েছে ত্রাণ শাখায়। সেখানে গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সব পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাসিব সরকার গুজব রটিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্টি এই হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন। জানাযায়, সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে নটাখোলা গ্রামের মৃত মোসলেম মোল্যার ছেলে মো. জাকির হোসেন মোল্যা বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় সেখানে লকডাউনের কার্যকারিতা পরিদর্শনে আসা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামনি উপস্থিত হন। জাকির হোসেনকে লাটিপেটা করে আহত করা হয়েছে এই খবরে সেখানে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আরও গ্রামবাসী জড়ো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলেগেলে সেখানে সালথা থানার এসআই মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপস্থিত হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপরেও হামলা চালায়। এতে এসআই মিজানুর রহমানের মাথা ফেটে যায়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গুলিতে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে সালথা থানা অভিমুখে রওনা হয়ে থানা ঘেরাও করে। পরে একেএকে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিস, স্থাপনা ও বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় ইউএনওর গাড়ি ও এসিল্যান্ডের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসিল্যান্ড মারুফা সুলতানা খান হিরামণি বলেন, তিনি রুটিন ওয়ার্কে বিভিন্ন বাজারে গিয়েছিলেন। এর অংশ হিসেবে ফুকরা বাজারে যান। সেখানে দুটি দোকান খোলা ছিল, তাদের বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। পেটানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান বলেন, লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে জনতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে গুজব রটিয়ে উপজেলা পরিষদ, থানা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ৫৮৮ রাউন্ড শট গানের গুলি, ৩২ রাউন্ড গ্যাস গান, ২২ টি সাউন্ড গ্রেনেড এবং ৭৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানান তিনি। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের সনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন ঘটনা নিয়ন্ত্রনে পাশের থানা ও জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় পুলিশ ও র‌্যাব এর আটজন সদস্য আহত হয় বলেও তিনি জানান। সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাসিব সরকার বলেন, রবিবার আনুমানিক সাড়ে ৬টার সময় সরকারের নির্দেশনা রয়েছে সন্ধ্যা ৬টার পরে কোন দোকান পাট খোলা থাকবে না। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাজার তদারকিতে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামনি। ফুকরা বাজারে গেলে সেখানে উত্তেজিত জনতা লকডাউন মানবে না বলে জানালে তিনি এলাকা ছেড়ে চলে আসেন। পরে অফিসে ফিরে পুলিশকে জানালে পুলিশ গিয়ে তাদের নিবারনের চেষ্টা চালায়। তারা এসময় পুলিশের উপরও হামলা করে। পরবর্তীতে বাজারে একটি গুজব ছড়ায় পুলিশ ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে। এছাড়া একজন হুজুরকে ধরে নিয়ে গেছে এবং তাকে মেরে মেলেছে। এই গুজব ছড়িয়ে একটি ধমার্ন্ধ গোষ্টি তারা সংক্রবদ্ধ হয়ে এসে হামলা করে। তিনি বলেন আমাদের উপজেলার প্রতিটি অফিসে মধ্যেযুগীয় কায়দায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা মূর‌্যাল ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স হামলা করে তারা। আমরা মনে করি স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্টি এই হামলা করে গুজব রটিয়ে। আমরা চাই একটি সঠিক তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা ইউক। এদিকে এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে একাধিক মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে এ ঘটনায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ