এফ এম সিফাত হাসান, শেরপুর:
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় গত শুক্রবার সকালে উপজেলার নিজপাড়া গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে পূর্ণিমা বেগম (২৬) নামের এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্বামী জাকারিয়া ইসলাম বাবুর (৩৫) বিরুদ্ধে।
এদিকে ওই ঘটনায় শুক্রবার সকালে লিখিত অভিযোগের পর ৬ আগস্ট রবিবার দুপুরে অভিযুক্ত জাকারিয়া ও তাঁর বাবা-মাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী গৃহবধূর পিতা ইন্তাজ আলী। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বর্তমানে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ, ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে জাকারিয়া ইসলাম বাবুর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই এলাকার ইন্তাজ আলীর মেয়ে পূর্ণিমা বেগমের। এদিকে বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়িতে নানান জিনিস ও টাকা দাবি করতো জাকারিয়া। দাবি পূরণ না হলেই বিভিন্ন কায়দায় মারধর করতো স্ত্রী পূর্ণিমাকে।
একপর্যায়ে গত শুক্রবার সকালে পূর্ণিমার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করে জাকারিয়া৷ ওইসময় বাবার কাছ থেকে টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে বাঁশের খুঁটি দিয়ে পূর্ণিমাকে বেধড়ক মারধর করে জাকারিয়া৷ ওইসময় তাঁদের তিন বছরের মেয়ে জুই, জাকারিয়ার বাবা সেকান্দর আলী ও মা কাজল রেখা উপস্থিত ছিলেন। পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন পূর্ণিমাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করান৷
রবিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ৪৬ নং বিছানায় শুয়ে ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন পূর্ণিমা। পাশেই বসে খেলা করছে তিন বছরের মেয়ে জুই। হঠাৎ লোকজন দেখেই কাঁদতে শুরু করে জুই। মাকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকে- আমার মাকে মাইরো না। পরে মা পূর্ণিমা তাকে বুঝিয়ে শান্ত করে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ পূর্ণিমা বলেন, কয়েকদিন পরপরই টাকা চায় আর মারধর করে। মেয়ের মুখের দিকে তাকাইয়া অনেক সহ্য করছি৷ এইবার তো আমারে গরুর মতো পিডাইছে। আমার মেয়েটা এখনও লোক দেখলেই ভয় পায়৷ আমি চাই মানুষরূপী এই পশুর যেনো শাস্তি হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে জাকারিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়৷ জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তানভীর ইবনে কাদের বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷ জখম খুব বেশি। তাকে ভর্তি রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সাইদুর রহমান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা নেওয়া হয়েছে৷ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত