বৃদ্ধিবেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি সহ যাত্রী সেবার মান দ্বিগুন হারে বেড়েছে। বর্তমান কাস্টম চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনে দক্ষ কর্মকর্তারা দায়িত্ব থাকার ফলে বহিঃর্গমন ও আন্তগমন পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবার মান দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মকর্তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তল্লাশির কারনে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। চোরাচালানীদের দৌরাত্ব কমার কারনে কাস্টম ইমিগ্রেশন থেকে (২০২২-২৩) অর্থ বছরে সরকার ১০০ কোটি টাকার অধিক রাজস্ব আয় করেছে। বর্তমান কোন ঝামেলা ছাড়াই সাধারন যাত্রীরা দীর্ঘ লাইন বাদে দ্রুত সময়ে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারছেন।
শুক্রবার (০৪ই আগষ্ট) দুপুরে বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা শারমিন আক্তার ও হাবিবুর রহমান এর নেতৃত্বে চোরাচালানি বন্ধ সহ সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও পাসপোর্ট যাত্রীদের ব্যাগেজ রুল অনুযায়ি কাংঙ্খিত সেবা দিতে সারিবদ্ধভাবে পাসপোর্ট যাত্রীদের স্কানিংয়ে ল্যাগেজ এবং যাত্রীদের হ্যান্ড মেটেল ডিটেক্টর দিয়ে শরীর তল্লাশি করা হচ্ছে। ভারত হতে আগত যাত্রীরা ব্যাগেজ রুল অনুযায়ি বেশি পণ্য আনলে তাদের পণ্য সরাসরি (আটক ব্যবস্থাপনা) ডিএম করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান এভাবে যাত্রীদের তল্লাশির ফলে লাগেজ পার্টির দৌরাত্ম্য কমেছে এবং রাজস্ব আয় দ্বিগুন হচ্ছে।
সরজমিনে বেনাপোল কাস্টমস ইমিগ্রেশন ঘুরে দেখা গেছে,ভারত হতে আগত যাত্রীদের ল্যাগেজ স্ক্যানিং চেক করার পর সন্দেহভাজন পুরুষ যাত্রীদের তল্লাশি এবং নারী যাত্রীদের আলাদা গোপন রুমে নিয়ে তল্লাশি করছেন। পাসপোর্ট যাত্রীদের নিকট থেকে আমদানি নিশিদ্ধ এবং অবৈধ পণ্য থাকলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তল্লাশি করছে যাতে কেউ গোপনে কোন ভাবেই অবৈধ পণ্য নিয়ে ভারত গমন এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে। বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত,সকালে ডিউটি করছেন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা ইব্রাহিম,হোসনেয়ারা,নূরে আলম এবং বিকাল সময়ে ডিউটি করছেন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা রবিউল মোর্শেদ,নাজমুল,সাবেরা শারমিন। এসব কর্মকর্তারা পাসপোর্ট যাত্রিদের হয়রানি ছাড়ায় যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কোন চোরাচালানি পণ্য যাতে ভারতে প্রবেশ করতে না পারে এবং ভারত থেকে কোন পণ্য দেশে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য অত্যন্ত সততা, নিষ্টা ও সতর্কতার সাথে কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
মাদারিপুরে বাড়ি পাসপোর্ট (ইণ০১৯১৫২১) যাত্রী জাকারিয়া মোল্লার নিকট ইমিগ্রেশন কাস্টমসে তল্লাশিতে কোন সমস্যা করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসারদের ব্যবহারে খুবই মুগ্ধ হয়েছি কোন রকম হয়রানি ছাড়ায় শুধু মাত্র ব্যাগেজ স্ক্যানিং করে সু-শৃঙ্খলভাবে কাস্টমসের কাজ শেষ করেছি।
চট্টগ্রামের পাসপোর্ট (ঊএ০১০৬৯৫০) যাত্রী একরামুন্নাহার নিশার কাছে কাস্টমস ইমিগ্রেশন তল্লাশিতে কোন হয়রানি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আমার স্বামী সহ পরিবারের ৬ জন এই প্রথম ভারত থেকে বেনাপোল কাস্টমস ইমিগ্রেশন করে বের হয়েছি। দায়িত্বরত কাস্টমস অফিসাররা আমাদের সাথে থাকা পরিবারের জন্য ক্রয় কৃত মালামাল স্ক্যানিং করে ছেড়ে দেন। কোন রকম ঝামেলা ও হয়রানি ছাড়ায় অতি দ্রুত কাস্টমসের সেবা পেয়েছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল ইমিগ্রেশনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পণ্যর রাজস্ব ফাঁকি দিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের দুপাশে বড় ল্যাগেজ সিন্ডিকেট রয়েছে। কিন্তু বর্তমান ল্যাগেজ যাত্রী শূন্যের কোঠায়। সকাল এবং বিকাল দুই সময়ে দুজন ননটেকার থাকার কারনে কোন রকম সুযোগ নিতে পারছেননা ল্যাগেজ ব্যবসায়ীরা। আর এই কারনে ল্যাগেজ ব্যবসায়ীদের দালাল সিন্ডিকেট সহ কিছু সুবিধাভোগী কার্ডধারী হলুদ সাংবাদিক চক্ররা কাস্টম কর্মকর্তাদের নামে ফেসবুকে অনলাইনে নানা ধরনের মনগড়া ভিডিও মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করছে।
বেনাপোল কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার তানভির আহম্মেদ জানান, বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের নিরাপত্তা ও পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে ২৭টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে অবৈধভাবে পন্য পারাপার ও চোরাচালানের কোন সুযোগ নাই। চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনে অসাধু কর্মকর্তা ও দালাল চক্রের যোগসাজসে লাগেজ পার্টিরা চোরাচালান কাজের সাথে জড়িত ছিলো আমি সিসি টিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষন করে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ব্যাগেজ রুল ব্যতিত ভারত থেকে বেশি পণ্য নিয়ে আসলে তাদের পণ্য ডিএম করে সরকারের রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। বর্তমান ইমিগ্রেশনে সেবার মান বৃদ্ধির কারণে পাসপোর্ট যাত্রীরা দ্রুত সশৃংঙ্খভাবে ভারতে গমনাগমন করতে পারছে।