রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সোনালী আঁশ পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরছে। পাটের দাম ভালো পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহী কৃষকেরা। চলতি পাট মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা জাগ দেওয়া ও পাট কাঠি থেকে পাটের আঁশ ছাড়ানো কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে, পাট কাটার মৌসুম শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি পাত না হওয়ায় পুকুর, ডোবা, নালায় পানি ছিলো না। এতে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চরম বিপাকে ছিলো কৃষকেরা। অনেকই ঘোড়ার গাড়ি, নছিমন, ভ্যান গাড়িতে করে মাঠ থেকে পাট এনে পদ্মার মোড়, ক্যানালঘাট, বেপারী পাড়া, উজানচর, হামেদের হাট, মুন্সী বাজার, দেবগ্রাম, হোসেন মন্ডলপাড়া, অন্তরমোড় এলাকায় পদ্মা নদীতে পাট জাগ দিচ্ছে কৃষকেরা। এতে করে কৃষকের বাড়ি খরচ গুনতে হচ্ছে। পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে পদ্মার মরা শাখাগুলো পানি ডুকে যাওয়াতে পাট জাগ দিতে পারছে তারা। আবার অনেক এলাকাতে দেখা গেছে পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুসহ পাট কেটে নদী নালা খালবিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছে। এবং নতুন পাট হাট বাজারে নিয়ে তাহা বিক্রি করাসহ সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে এই উপজেলার কৃষকেরা।গত বছরের চেয়ে এবার পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আর চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ৪৮ শত ৭০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ২ শত হেক্টর জমিতে পাট বেশি আবাদ হয়েছে। তবে পাট আবাদের শুরুতেই বৃষ্টির পানিতে নিচু জমির কিছু পাট তলিয়ে নষ্ট হয়। পাট কাটার মৌসুম শুরুতেই অনাবৃতি আর টানা তাপদহ খরার কারনে পাট জাগ দেওয়া জন্য পানি সংকটে পরেছে কৃষকেরা। পদ্মা নদীর পানি ছাড়া পাট জাগ দিতে পারছে না তারা।
চরঅঞ্চলের কৃষক হাসান বলেন, আমি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছিলাম।প্রতি বিঘা জমিতে পাট আবাদ করতে খরচ হয়েছে৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। পাট উৎপাদন হয়েছে প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ করে। যার বাজার দর প্রতি মণ ২৮ শত টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়ও বিঘা প্রতি প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকার পাঠকাঠি পাওয়া যায়। এবার পাটের আবাদ অনেক ভালো হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি করে পাট আবাদ করার চিন্তা ভাবনা করছি।
আরেক কৃষক মফিজুল বলেন, এই বছর আমি তিন বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার পাটের ভালো ফলন হয়েছিলো। তবে পানি সংকটের কারনে ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করে পদ্মা নদীতে নিয়ে পাট জাগ দিয়ে ছিলাম। পদ্মা পানি পরিস্কার থাকায় পাটের কালার অনেক ভালো হয়েছে।
বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামও পেয়েছি।সব খরচ মিটিয়ে অনেক টাকা লাভ হয়েছে।আগামী বছরে আরো দুই বিঘা বেশি করে আবাদ করবো।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষিবিদ মো. খোকন উজ্জামান বলেন, এ বছরে এই উপজেলায় ৪৮ শত ৭০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে।যা গত বছরের তুলনায় ২ শত হেক্টর জমিতে পাট বেশি আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষক ভরা পাট মৌসুমে পাট কাটা জাগ দেওয়া এবং পাটে আঁশ ছাড়ানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। পাটের দাম গত বছরের চেয়ে বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে।
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত