আজ মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে সাগরে মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এরইমধ্যে গভীর সাগরে যাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছেন জেলেরা। ট্রলার ধোয়া-মোছাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। রাত বারোটার সঙ্গে সঙ্গেই ইলিশ শিকারে গভীর সাগরে যাত্রা করবে শতশত মাছ ধরা ট্রলার। মৎস্য বিভাগ বলছে, মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সুফল মিলবে ইলিশের উৎপাদনে।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, কুয়াকাটাতে সাগরের উপকূলে সারি সারি নোঙর করা মাছ ধরার ট্রলার। প্রতিটি ট্রলার সেজেছে নতুন সাজে। ট্রলারে টাঙানো হয়েছে নতুন পতাকা। উপকূলের ঘাটগুলোতে আনা হচ্ছে বড় বড় জাল। শেষ মুহূর্তে জালের মেরামত কাজও দেখছেন জেলেরা। তারপর দ্রুত জালগুলো তোলা হচ্ছে ট্রলারে। একই সঙ্গে মজুত করা হয়েছে খাদ্য, ড্রামসহ নানা সামগ্রী। ব্যস্ততার যেন শেষ নেই জেলে ও ট্রলার মালিকদের। জেলেরা বলছেন, ৬৫ দিন পর সাগরে যাবার আনন্দে মেতেছেন তারা।
বরগুনার জেলেরা বলছেন, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ না হলে পুরোপুরি মিলবে না নিষেধাজ্ঞার সুফল। পাশাপাশি উপকূলের কাছাকাছি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিশিং বোট বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি চান তারা।
এছাড়া পটুয়াখালী-বরগুনার পাশাপাশি নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরেও জেলে পল্লিতে চলছে মাছ ধরতে সাগরে যাত্রার প্রস্তুতি। কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আশপাশে অপেক্ষায় আছে শতশত মাছ ধরার ট্রলার। ৬৫ দিনের অপেক্ষা শেষে ট্রলার নিয়ে সাগরে যাবেন জেলেরা।
মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ আলী বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষ হচ্ছে রোববার মধ্যরাতে। তাই মনে খুব আনন্দ। কারণ ৬৫ দিন বন্ধের কারণে সংসার নিয়ে খুবই কষ্টের মধ্যে ছিলাম। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে সাগরে মাছ শিকারে যাব।
ফিশারি ঘাট এলাকার জেলে ছৈয়দ আলম বলেন, ‘ট্রলারে তেল, জাল, ড্রাম, রশি ও খাদ্যসহ সব ধরনের সামগ্রী মজুত করা হয়েছে। আমরা ১৭ জন জেলে ট্রলারে অবস্থান করছি। আমরা ১০ দিনের জন্য সাগরে মাছ শিকারে যাব।’
সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ ছিল বরফ মিলগুলো। এখন বরফ মিলগুলো চালু করতে চলে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আর মিলগুলো খোলায় পুনরায় কাজে ফিরছেন শ্রমিকরা।
বিমানবন্দর এলাকার বরফ মিল মালিক তৈয়ব বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে বরফ মিলে বরফ উৎপাদন বন্ধ ছিল। যার কারণে শ্রমিকদেরও ছাঁটাই করতে হয়েছিল। কিন্তু এখন নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে, তাই শ্রমিকরা কাজে ফিরেছে। এখন যন্ত্রপাতিগুলো মেরামত করা হচ্ছে। আর রোববার থেকে বরফ উৎপাদন শুরু হবে।
জেলা মৎস্য অধিদফতরের দেয়া তথ্যমতে, কক্সবাজারে নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৬৪ হাজার ৩৯৪ জন। আর নিবন্ধিত নৌযান রয়েছে ৫ হাজার ১১৩টি।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস