• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
মাটিরাঙ্গায় জোন কমান্ডারস কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন গুইমারা ইউনিয়ন একাদশ মহালছড়ি উপজেলা যুব রেড ক্রিসেন্ট কমিটি গঠন পান চাষে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা যাচ্ছে বিভিন্ন শহরে বাগেরহাট সদরের ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত রুমায় যৌথবাহিনীর অভিযানে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ রাজবাড়ীতে বিদেশি মদ ও ফেনসিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার পদ্মায় মিলল ১৪ কেজির পাঙ্গাশ পদ্মায় জেলের জালে ধরা এক চিতল বিক্রি হলো ২২ হাজার টাকা বাঙ্গালহালিয়াতে অটোরিক্সা চালক কল্যাণ এসোসিয়েশন ২০২৪ইং নির্বাচন সম্পন্ন পাহাড়ি-বাঙ্গালির মধ্যে পারস্পারিক বিশ্বাস, সুসম্পর্ক ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলার আহ্বান- ওয়াদুদ ভূঁইয়া রাঙামাটিতে পিসিসিপি’র ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন সোনাগাজীতে কৃষকদের মাঝে সার বীজ ও নগদ অর্থ  বিতরণ 

নানা সমস্যায় জর্জরিত দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মোঃ মহাসিন মিয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) / ১৫৮ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন রোগির চাপ বেশি এবং পযাপ্ত পরিমাণে শয্যা না থাকায় কতৃপক্ষকে নানা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। জেলার বৃহত্তর এ উপজেলার ৫ টি ইউপির সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র মাধ্যম দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

বৃহত্তর জনসংখ্যা বহুল এ উপজেলার মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এবং শয্যা সংকট পরিত্রাণে উপজেলার ১০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট করতে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কাজ শুরু সরকার। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। একাধিকবার সময় নিয়েও প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজের ধীরগতিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ অবস্থায় হাসপাতালে আসা রোগীদের প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। প্রত্যন্ত এ এলাকার মানুষের প্রায়ই জ্বর, পাতলা পায়খানা, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, ম্যালেরিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত সহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এবং প্রতিদিন এসব রোগী হাসপাতালে এসে ভিড় জমায়। প্রতিদিন হাসপাতালে শত-শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। তাছাড়া দৈনন্দিন আবাসিক রোগী এবং বহিরাগত রোগী বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত চাপ নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে কর্মরত চিকিৎসকদের।

অন্যদিকে হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকসহ সেবাকর্মী সংকট রয়েছে। টেকনোলজিস না থাকায় দীর্ঘদিন অচল হয়ে পড়ে থাকা এক্স-রে মেশিন চালু হয়েছে বলে জানায় কতৃপক্ষ। এক্স-রে মেশিন চালু হলেও সাধারণ মানুষ সেবা পাচ্ছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে স্টোর কিপার (ফার্মাসিস্ট) না থাকায় রেডিও গ্রাফার সোহেল চাকমাকে দিয়ে স্টোর কিপারের কাজ করাচ্ছে কতৃপক্ষ।

দু’তিন মাস মেয়াদ আছে এমন ঔষধ কম দামে কিনে বেশি টাকা টেন্ডার দেখানো, স্টোর কিপার প্রয়োজনীয় ঔষধ না ছাড়ায় স্টোরে থাকা ঔষধ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ আগুনে পুড়ে ফেলা, সরকারি ঔষধ বাহিরের ফার্মেসিতে বিক্রি করা, রোগীদের মাঝে প্রয়োজনীয় ঔষধ বিতরণ না করা, হাসপাতালের বিভিন্ন সরঞ্জামাদী নিজেদের বাসায় নিয়ে ব্যবহার করা সহ অভিযোগের অন্ত নেই কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

সুবিধাবঞ্চিত অনেকেই (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, হাসপাতালে এক্স-রে থাকা সত্ত্বেও তাঁরা বাহিরের ল্যাবে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বিনামূল্যে দান করা রক্তের ম্যাচিংটাও করা যায়না এখানে। সকল রোগীদের ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রয়োজনীয় মূল্যবান ঔষধ গুলো হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের লেখা প্রিসক্রেপশনে বাহিরের ফার্মেসি থেকে কিনে নিতে হয়। দু’একজন ছাড়া বাকি নার্সদের আচরও মলিন। হয় বর্ণ বৈষম্যতা।

ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা না দেয়া, সরকারি ডাক্তারের অফিস টাইমে বেসরকারি ল্যাবে চেম্বার করা, বিভিন্ন ফার্মেসির মার্কেটিং অফিসাররা সারাদিন হাসপাতালের ডাক্তারের চেম্বারে বসে থাকা সহ নানা বিষয়ে নিজেদের আক্ষেপ প্রকাশ করেন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষেরা।

এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কতৃপক্ষের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, কনোনায় ৬ মাস কাজ বন্ধ থাকা, হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি সহ নানা কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ পিছিয়েছে। নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানো হয়েছে। দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি আমরা।

দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তণয় তালুকদার বলেন, একাধিকবার সময় বাড়িয়ে নেয়ার পরও শেষ করতে পারেনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। স্বল্প শয্যা নিয়ে অতিরিক্ত রোগির চাপ থাকায় আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। কাজটি দ্রুত শেষ হলে মানসম্মত সেবা পাবে উপজেলার হাজারো মানুষ।

হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের একাধিক অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, স্টোর কিপার না থাকায় রেডিও গ্রাফারকে দিয়ে স্টোর কিপার পরিচালনা করা হচ্ছে। টেকনোলজিস না থাকায় এক্স-রে মেশিন চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

রোগীদের প্রয়োজনীয় ঔষধ না দেয়া, ঔষধ মেয়াদোত্তীর্ণ ও পুড়ে ফেলা, বর্ণ বৈষম্য সহ সকল অভিযোগের বিষয়ে অবগত নয় তিনি। তবুও তদন্ত পূর্বক এমন কর্মকাণ্ড ঘটে থাকলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

তদারকির মাধ্যমে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করা সহ সাধারণ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল প্রকার অনিয়ম ও বৈষম্যমুক্তের দাবি জানান স্থানীয়রা।

পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ