পদ্মা বহুমুখী সেতু উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরার আওতায় আনার কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে সেতুর নিচ তলায় অপটিক্যাল ফাইবারের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। সেই সঙ্গে আরও ৫০ ক্যামেরা স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই এই কাজ সম্পন্ন হবে। সেতুর নিরাপত্তার জন্য মনিটরিং আরও জোরদার হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা সেতুতে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। সেজন্য সেতুর নিচ তলা ও ওপর তলায় ক্যামেরা স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। এরইমধ্যে সেতুর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা ব্রিজ ট্রাফিক মনিটরিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেন্টার থেকেই ক্যামেরার মাধ্যমে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তসহ পুরো সেতু সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবে। সবগুলো ক্যামেরার ভিডিও একমাস সংরক্ষণ করা হবে। যার সুবিধা নিতে পারবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও। সড়কপথ, রেলপথ, টোল প্লাজা ও সেতুর আশপাশের নদী এবং অ্যাপ্রোচ রাস্তা এর আওতায় থাকবে।
বিআরটিএ'র সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত থাকায় যানবাহনের সব তথ্যও দৃশ্যমান হবে। এতে সহজেই সঠিক স্থান উল্লেখ করে পরবর্তীতে রকম চ্যালেঞ্জ হলে দ্রুতই নির্দেশনা দেয়া যাবে। সেতু এলাকায় যেকোনো ধরনের অপরাধ শনাক্ত করতে সক্ষম হতে যাচ্ছে এই মনিটরিং সেন্টার।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই পুরো সেতু ও অ্যাপ্রোচ, ক্যামেরার আওতায় আনা সম্ভব হবে। সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজার পিটিজেড, ডোম, বুলেট ও ফিসআই চার ধরনের ৫২টি ক্যামেরা এরই মধ্যে ব্যবহার হচ্ছে। নিরাপত্তা ও ট্রাফিক আইন মেনে নির্বিঘ্নে যান চলাচল নিশ্চিত করতে পুরো সেতু জুড়ে আরও ৫০টি উচ্চ ক্ষমতার ক্যামেরা স্থাপনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজ। দুইস্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত এই সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় তৈরি সেতুটি ৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০ দশমিক ১২ মিটার বা ৪৯২ দশমিক ৫ ফুট এবং চওড়ায় ২২ দশমিক ৫ মিটার বা ৭৪ ফুট। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার বা ৩ দশমিক ৮২ মাইল। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। ১২০ মিটার বা ৩৯০ ফুট গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু এটি।
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য নেয়া ঋণের ৩য় ও ৪র্থ কিস্তির ৩১৬ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকা পরিশোধ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। ১৯ জুন (সোমবার) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের কাছে এ টাকা তুলে দেন সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন।
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল ১ম ও ২য় কিস্তির মোট ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়। এর ফলে প্রথম বছরে সর্বমোট ৬৩২ কোটি ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৪৩ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় পুরো অর্থ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ এমএস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত