একতরফা নির্বাচনই এখন আওয়ামী লীগের চেতনা। গণতন্ত্রের নামে চলছে এক দলীয় শাসন। আইনের শাসন এখন আওয়ামী শাসনে পরিণত হয়েছে। দেশে কোন সরকার আছে বলে মানুষ মনে করে না। বললেন বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আমনের ভরা মৌসুমে আড়তদার-মিলাররা ‘কারসাজি করে’ চালের দাম বাড়াচ্ছে লে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক যে মন্তব্য করেছেন তার কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, দেশে কোনো সরকার আছে বলে জনগণ মনে করে না। প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম। আসলে সরকারদলীয় সিন্ডিকেটের কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সিন্ডিকেটের টাকার ভাগ সরকারের মন্ত্রীদের কাছেও যায়। তাই বাজার হয়ে পড়েছে নিয়ন্ত্রণহীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব মনোপীড়ায় ভুগছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথাতেই বোঝা যায় যে, নির্বাচনে বিএনপি না আসুক সেটি তারা চেয়েছিলেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই তারা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন। কারণ বিএনপি’র অংশগ্রহণের কারণে তাদেরকে বিজয়ী হতে ভোটকেন্দ্র দখল করতে হয়, নিশিরাতে নৌকায় সীল মেরে ব্যালট বাক্স ভরতে হয়, নির্বাচনে সহিংসতা করতে হয়, ভোটারদের ভয় দেখাতে হয়। ফলে তাদের স্বরুপ জনগণের সামনে উন্মোচিত হয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
রিজভী আরো বলেন, এ কারণেই ওবায়দুল কাদের সাহেবের বাকশালী চেতনা জাহির হয়ে পড়ে যে, বিএনপি কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। কারণ একতরফা নির্বাচনই হচ্ছে তাদের চেতনা। বন্দুকের জোরে গণতন্ত্রকে হত্যা করে দেশ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা এখন বাকশালী গণতন্ত্রের চর্চা করছেন।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। তার নমুনা আপনারা দেখেছেন। গত কাল শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি আর পাচারের সাথে জড়িত এমপি পাপুলের স্ত্রী ও কন্যা জামিন পেয়েছেন। অথচ মিথ্যা অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হয় না। হত্যাকান্ডের আসামীদের জামিন হয়, ক্যাসিনো কান্ডের হোতাদের জামিন হয়, টাকা পাচার কান্ডের হোতাদের জামিন হয়, অথচ জামিন হয় না গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের।
দেশে আওয়ামী গণতন্ত্র চলছে দাবি করে তিনি আরো বলেন, আজ দেশব্যাপী ২৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনগুলোও আগের অবস্থার মতোই রক্তপাত ও ডাকাতির নির্বাচন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অধিকাংশ পৌর নির্বাচনী এলাকায় তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে। সরকারের ‘হার্ড হিটিং’ ইমেজ বজায় রাখতে ভোটারসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চলছে বেপরোয়াভাবে।