রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ যৌনপল্লি এখানে অবস্থিত। এটি মুলতঃ টুরিস্ট এলাকা হওয়ায়,নানা পেশার মানুষের চলাফেরা রয়েছে এখানে। তাই মাদকের নিরাপদ অভয় অরণ্য সহ নানা অপরাধের প্রবণতাও দৌলতদিয়া তে বেশি।
শিমুল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সুরাপ মন্ডল পাড়ার একজন দরিদ্র মায়ের বেকার ছেলে। আজ থেকে ৮ বছর পর্বে এই শিমুলের সংসার চলতো একবেলা খেয়ে না খেয়ে। সংসার চালানো জন্য তাই শিমুল কাজ নেয়, দৌলতদিয়া সিনেমা হলের সামনের একটি ফটো স্টুডিওতে। বেতন সামান্য কিছু টাকা। এই স্টুডিওতে কাজ করা অবস্থায় প্রেম করে বিয়ে করে,
দৌলতদিয়ার এক সময়ের কুখ্যাত মাদক সম্রাগি ৩২ বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামী রহিমা বাড়ীওয়ালীর ছোট মেয়ে তমা ওরফে তুলিকে। এই বিয়ের কারণেই ভাগ্যের পরিবর্তন হয় শিমুলের। বৈবাহিক সুত্রে পাওয়া শাশুড়ীর হিরোইনের ব্যবসার দায়িত্ব নেয় শিমুল। বিয়ের মাত্র ৮ বছরের মাথায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে শিমুল নিজেকে গড়ে তুলে দৌলতদিয়ার কুখ্যাত মাদক সম্রাট হিসেবে।
জানা যায়,এই শিমুল বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক। রাজকীয় স্টাইলে তার চলাফেরা। নিজের নিরাপত্তার জন্য সব সময় সাথে থাকতো বডিগার্ড। জেলাতে নির্মাধীন রয়েছে তার বহুতল ভবনের কাজ। গঁলায় পরিহিত থাকে ২ ভরি ওজনের ঈগল পাখির রকেট ওয়ালা স্বর্ণের চেইন। বাম ও ডান হাতের আটটি আঙ্গুলে থাকে কয়েক ভরি ওজনের ৮টি স্বর্ণের আংটি। ডান হাতের কবজায় থাকে স্বর্ণের বেচ। ব্যবহার করতো সুজুকি জিকচার মডেলের মোটর সাইকেল। যার মুল্য ৫ লাখ টাকা। আর ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স জমিজমা তো রয়েছেই। তার লাইফ স্টাইলের এমনি একটি ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিলো কিছু দিন আগে। এই অঢেল সম্পদের পাহাড় অবৈধভাবে মাদকের ব্যবসা করে গড়ে তুলেছেন তিনি।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিলো, শিমুল দীর্ঘদিন যাবত শাশুড়ীর সুত্রে পাওয়া হিরোইনের ব্যবসা করে যাচ্ছে। দৌলতদিয়া পুরাভিটা নিজস্ব বাড়ী সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় তার ছিলো, হিরোইন পাইকারী ও খুচরা বিক্রির শক্তিশালি একটি সিন্ডিকেট। নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে বডিগার্ড কাউসার,গোলাপি,
আমেনা,সালমা সহ একাধিক ব্যক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতো মাদকের ব্যবসা।
মঙ্গলবার ১৩ই জুন দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মাধ্যমে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার জানান, সোমবার ১২ই জুন গভীর রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের কাছে একটি গোপন সংবাদ আসে,কুখ্যাত মাদক কারবারি শিমুল মাদকের একটি বড় চালান নিয়ে দৌলতদিয়ার পুড়াভিটা এলাকায় তার নিজ বাড়িতে প্রবেশ করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নামে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম। এসময় তাকে ১০০ গ্রাম হিরোইন সহ আটক করে পুলিশ। যার মুল ১০ লাখ টাকা।
এবিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, পুলিশের কাছে সংবাদ ছিল শিমুল বড় একটা মাদকের চালান দিয়ে তার নিজ প্রবেশ করছে। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার নামে ইতিমধ্যে দুই মাদকের মামলা রাজবাড়ীর কোর্ট বিচারাধীন রয়েছে। পরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস