রাজবাড়ী গোয়ালন্দ উপজেলা একদিকে নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা। অন্য দিকে এশিয়া মহাদের সর্ববৃহৎ যৌনপল্লি এখানে অবস্থিত থাকায় এটি মুলতঃ টুরিস্ট এলাকাও বটে। সরকারী হিসেবে এখানে যৌনকর্মীর সংখ্যা ২ হাজারের মতো। কিন্তু বেসরকারের হিসেবে সংখ্যাটা আরো বেশি বলে জানা যায়। তাই বিভিন্ন জেলার অসৎ অপকর্মে লিপ্ত থাকা মানুষের আনাগুনা রয়েছে দৌলতদিয়াতে। এই যৌনপল্লির একজন যৌনকর্মী মিতা বেগম। জীবনের শুরুতে অর্ধেকটা সময় পার করেছেন যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করে। অসৎ উপায়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে বড় লোক হওয়ার নেশা মিতার দীর্ঘদিনের। তাই তো শুরু পতিতা বৃত্তি। এই পতিতা বৃত্তি করার সময় ভালোবেসে বিয়ে করে দৌলতদিয়ার পতিতালয়ের কুখ্যাত মাদকের সম্রাট গাঁজা ব্যবসায়ী শহিদুলকে। কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই দুর্ভাগ্য ক্রয়ে হার্ট স্টক করে মারা যায় শহিদুল। তারপর থেকেই শহিদুল এর অবৈধ মাদকের ব্যবসার দায়িত্ব নেয় স্ত্রী হিসেবে মিতা বেগম।
বর্তমানে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিতে একটি বাড়ী ভাড়া নিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টা মিতা ও তার বডিগার্ড মামুন সহ ৫ থেকে ৬ জন লোক দিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি করছে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা সহ নানা ধরনের মাদক। এই মাদকের ব্যবসা করে মিতা কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। গড়েছেন ওঢেল সম্পদের পাহাড়। জায়গা- জমি, ব্যাংক বেলেন্স সহ নানা স্থাপনা। তবে এখানেই থেমে নেই মিতা অবৈধ মাদকের টাকা দিয়ে দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে যথারীতি রাজত্ব করে বেড়াচ্ছেন তিনি। স্থানীয় একদল ভাড়া করা কের্ডার বাহিনীসহ, বিভিন্ন মাধ্যমেকে টাকা দিয়ে চলে মিতার এই গাঁজাসহ নানা ধরনের মাদকের রমরমা ব্যবসা। কেউ তার মাদক সহ গাঁজার ব্যবসার বিরুদ্ধে কথা বা প্রতিবাদ করলে তাকে কৌশলে অসৎ উপায় অবলম্বন করে মুটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে ধরিয়ে দেয় মিতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু বড় বড় অসাধু কর্মকর্তা মিতাকে বড় আপা বলে ডাকে।
প্রশ্ন হলো? একজন মাদকের সম্রাট কিভাবে বড় আপা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু কিছু অসাধু কর্মকর্তার এমন আচার-আচরণ দেখে অবাক স্থানীয়রা। কিন্তু প্রতিবাদ করার সাহস নাই কারোরই। কারণ সাহস দেখালেই তো জেলে যেতে হবে। নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দীর্ঘদিন যাবত এ কাজ করছে মিতা। কিছুদিন পর্বে একজন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক মিতার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তাকে মিতার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে বেধড়ক মারপিট সহ মোবাইল কেড়ে নেয় মিতা। পরে বেশ কিছু হাসপাতালে থাকার ঐ সাংবাদিক স্থানীয় একজন নেতার কাছে বিচার দিলে। ঐ সাংবাদিক এর পায়ে ধরে মাপ চায় মিতা। ফিরিয়ে দেয় মোবাইল ফোন।
এবিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার জানান, এই মিতা ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিতে রমরমা গাঁজার ব্যবসা করে আসছিল। কিন্তু সে কখনো গাঁজা নিজে বহন করত না। যার কারনে পুলিশের তাকে আটক করতে নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে থানায় কয়েকটি গাজা সহ মাদক মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যহত রেখেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের সদস্যরা।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস