রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে গরু হাট ইজারায় সরকারী নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনিয়মের মাধ্যমে সর্বনিন্ম দরদাতাকে ইজারা প্রদান করেছে পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডল।
কাঙ্খিত মূল্যের চেয়েও কম মূল্যে অসাধু উপায়ে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সর্বনিন্ম দরদাতাকে হাট ইজারা প্রদান করায় সর্বোচ্চ দরদাতা বিভাগীয় কমিশনারে নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সর্বোচ্চ দরদাতা মন্ডল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নাসিম মাহমুদ ইভান। এ অভিযোগে তদন্ত করছেন রাজবাড়ীর স্থানীয় সরকার বিভাগ।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, গত ১ ফেব্রয়ারী ১৪৩০ সনের জন্য রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার গরুর হাট ইজারার জন্য দরপত্র আহব্বান করে। দরপত্রে গরুর হাটের সরকারি কাঙ্খিত মূল্য দেয়া হয় ২৭ লক্ষ ৪ হাজার টাকা। গরুর হাট ইজারার জন্য মোট তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। তিনটি দরপত্রের মধ্যে মন্ডল ট্রেডার্স সর্বোচ্চ দরদাতা ডাকমূল্য ২৯ লক্ষ টাকা, মৌ এন্টার প্রাইজ ২৭ লক্ষ ১৫ হাজার ৩শ ৭৫ টাকা এবং সর্বনিন্ম দরদাতা জাকির হোসেন ২৬ লক্ষ এক হাজার টাকা হিসেবে দরপত্র জমা দেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা মন্ডল ট্রেডার্স ডাক মূল্য ২৯ লক্ষ এবং আয়কর ও ভ্যাট ৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা সহ ৩৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে গোয়ালন্দ পৌর মেয়রের অনুকুলে জমা প্রদান করেন। কিন্তু পৌরসভা সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাট ইজারা প্রদান না করে সর্বনিন্ম দরদাতা জাকির হোসেনকে গরুর হাট ইজারা প্রদান করেন। জাকির হোসেন কাঙ্খিত সরকারী মূল্যের চেয়ে ১ লক্ষ ৩ হাজার টাকা কমে দরপত্র জমা দেন। কাঙ্খিত মূল্য না পেলে পূনরায় দরপত্র আহব্বান করার নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু মন্ডল ট্রেডার্স সরকারী নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বেশি মূল্যে প্রে-অর্ডার করা সত্বেও হাট প্রদান না করে পরিকল্পিত ও অসাধু উপায়ে গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডল সর্বনিন্ম দরদাতা জাকির হোসেনকে হাট ইজারা প্রদান করেন। এতে হাট বাজার ব্যবস্থাপনা নীতিমালার পরিপন্থি ও সরকারী রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াসহ সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করার সামিল। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদে থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষে কাজ না করে ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্য সরকারি কাঙ্খিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে গরু হাট ইজারা প্রদান করেছেন।
এ কারণে গত ২৭ এপ্রিল সর্বোচ্চ দরদাতা মন্ডল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী নাসিম মাহমুদ ইভান জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে গত ১৫ মে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আতিকুল ইসলাম রাজবাড়ী জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে অবহিত করার জন্য পত্র প্রেরণ করেছেন।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র মোঃ নজরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা এবং তার পরের জন নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা ও দরপত্র জমা দেয়নি। এজন্য পৌরপরিষদ সভা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জাকির হোসেনকে ইজারা প্রদান করা হয়। সরকারি কাঙ্খিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে কেন দিলেন আর পূনরায় কেন দরপত্র আহব্বান করলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, চারদিকে হাট আর স্থান কমে যাবার কারণে গরুর হাট ছোট হয়ে আসছে। এ হাটটি টিকিয়ে রাখার জন্য পরিষদের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইজারা দিয়েছি।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত