খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে এক গৃহবধূর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে মোফাজ্জল হোসেন সিকদার ওরফে মল্লিক(৬৫) নামে এক ব্যবসায়ী ও তার সহযোগি মো:মোস্তফা টেইলার।তারা দুজনই রামগড় পৌরসভার মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ৮ই মে সোমবার খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে ধর্ষণ মামলায় ওই দুই আসামীকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
রামগড় পৌরসভার বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ রাধামালা ত্রিপুরার(ছদ্ম নাম) অভিযোগে জানা, রামগড় শহরের উপকন্ঠে পুরাতন কৃষিব্যাংক ভবন সংলগ্নে একটি আবাসিক কোয়ার্টারে ভাড়া বাসায় থাকাকালীন পার্শ্ববর্তী ভবনের মালিক মোফাজ্জল হোসেন সিকদার প্রকাশ মল্লিক নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে প্রতিবেশী হিসেবে তাদের পরিচয় হয়। একদিন প্রতিবেশী মল্লিক তাকে মোস্তফা টেইলার নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বাসায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় মল্লিক তার স্মার্টফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। ধর্ষণের পর এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বলা হয় এবং প্রকাশ করলে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় মল্লিক। রাধামালা আরও অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে আপত্তিকর ভিডিও প্রচারের হুমকি দিয়ে মল্লিক তাকে বহুবার ধর্ষণ করেছে। তার অত্যাচারে এক পর্যায়ে মিরেরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে চলে যাওয়ার পরও তিনি মল্লিকের পাশবিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে পারেননি। ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরারঞ্জের ভাড়া বাসায় গিয়ে ও সে তাকে ধর্ষণ করে। তিনি বলেন, এক সময় তার স্বামীকে পুরো ঘটনা জানানোর পর তার পরামর্শে খাগড়াছড়ি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মোফাজ্জল হোসেন সিকদার (মল্লিক) ও তার সহযোগি মো: মোস্তফা টেইলারকে আসামী করে অভিযোগ পত্র দায়ের করি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আদালতের নির্দেশে ২১-৩-২৩ তারিখ রামগড় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, (সংশোধিত ২০১০) ৯(১)৩০ ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
সূত্র জানায়, থানায় মামলা রুজুর পরই আসামীদ্বয় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে আসেন। জামিনের মেয়াদের শেষ দিন সোমবার ৮ই মে খাগড়াছড়িতে জেলা ও দায়রা জজ আদাতলে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে দুই আসামীকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো: সামছুল আমিন জানান, এর আগে আসামীর ব্যবহার করা একটি মোটরসাইকেল ও একটি মেমোরী কার্ড জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মেমোরীকার্ডে ভিকটিমকে যৌন নিপীড়নের দৃশ্যের অনেক স্থির ও ভিডিও চিত্র রয়েছে। জব্দকৃত আলামত আদালতে পেশ করা হয়েছে।
এদিকে, সোমবার রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: নাজিম উদ্দিন ও রামগড় থানার ওসি মিজানুর রহমান ভিকটিমকে সাথে নিয়ে আসামী মল্লিকের তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলার ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় তৃতীয় তলার দরজা তালাবদ্ধ ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: নাজিম উদ্দিন বলেন, ধাপে ধাপে মামলার ক্ষেত্রগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে পি ও পরিদর্শন করা হল। ভিকটিমের জমানবন্দী গ্রহণ, মেডিকেল পরীক্ষা ইত্যাদিও পর্যায়ক্রমে করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মোফাজ্জল হোসেন সিকদার(মল্লিক) তিন সন্তানের জনক। তার দুই ছেলে ফ্রান্স প্রবাসী এক মাত্র মেয়ে চট্টগ্রামে স্বামীর বাড়িতে থাকেন।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস
সম্পাদকঃ এম. শাহীন আলম।। প্রকাশকঃ উম্মে হাবিবা
যোগাযোগ: ০১৬৪৭-৬২৭৫২৬/ ০১৮২৩-৯১৯০৯৫ whatsapp
parbattakantho@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত
পার্বত্য কন্ঠ © ২০১৮-২০২৪ সংরক্ষিত