১২ মার্চ আনুমানিক বেলা ১টায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলিবর্ষণ করেন। ঘটনারস্থল বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি ও রুমা সীমান্তবর্তী পাইখ্যং-রনিন পাড়া এলাকা। এসময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং দুই জন সেনা সদস্য আহত হয়।আইএসপিআর বরাত জানা যায়, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন বিগত ৩০ বছর যাবৎ অত্যন্ত সততা, নিষ্ঠা এবং পেশা দারিত্বের সাথে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পিতার নাম মৃত শমসের আলী। তিনি রংপুর সদরের ঘাঘটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বান্দরবানের থানচি উপজেলার লিক্রিতে নির্মিত সড়কে ২১ কিলোমিটার এলাকায় শ্রমিকদের বহনকারী দুটি ট্রাকে লক্ষ্য করে ১১ মার্চ (শনিবার) বিকালে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ সদস্যরা অতর্কিত গুলি চালিয়েছে। গুলিতে মো. জালাল (২৭) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘটনায় এক শ্রমিক আহত হলেও আরেকটি ট্রাকে থাকা ১২ জন শ্রমিক নিখোঁজ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিখোঁজ শ্রমিকের মধ্যে সূর্য দাশ (৩০) এবং চালক রুবেল (৩০) বাকীদের নাম জানা যায়নি৷ তবে সূত্র জানিয়েছে কেএনএফ ১২ জন শ্রমিকদের মধ্যে কয়েকজনকে ছেড়ে দিয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে বাবুল ফরাজি এবং মো. শুক্কর। তারা থানচি এসে পৌছেছে।
উপরোক্ত দুইটি ঘটনার প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) বান্দরবান জেলা কর্তৃক অদ্য ১৪ মার্চ বিকাল ৩ ঘটিকায় বান্দরবান জেলা সদরে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, পিসিএনপি’র বান্দরবান শাখার সভাপতি ও আলীকদম উপজেলায় বারবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম এবং প্রধান প্রতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান ও আরো বক্তব্য রাখেন, মহাসচিব আলমগীর কবিরসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ। ঘণ্টাব্যাপী চলা বিক্ষোভ সমাবেশ ১ হাজার মানুষের সমাগম হয়।
বক্তৃতারা বলেন,
স্থানীয় দেশপ্রেমিক বাঙ্গালীরা বলেন, শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। যারা সেনা মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করেছে এবং বাঙ্গালী শ্রমিকদের গুলি করে আহত করাসহ নিরিহ মানুষ অপহরণ করেছে তাদের বিষ দাঁত উপড়ে ফেলা হবে। তাদের বিরুদ্ধে যদি প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে দেশপ্রেমিক জনতা কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে। আমরা আর বসে থাকবো না। যেখানে সেনাবাহিনী হত্যার শিকার হয় সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? পার্বত্য চট্টগ্রামে মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায়। কেউ নিরাপদে নেই। মানুষ এক আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন-গুম আজ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকার ও প্রশাসনের নিকট জোর আহ্বান করছি।
এম/এস