রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৈশ প্রহরী তরিকুল ইসলামের দ্রুত বদলি ও বিভাগীয় শাস্তির দাবিতে একাট্টা হয়েছেন হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা (২য় শ্রেনী) ও কর্মচারীবৃন্দ।
তারা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারী ৪৮ জনের স্বাক্ষরে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা কাজী কেরামত আলী এবং জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ ইব্রাহিম টিটনের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়ায় তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ার চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিন আলাপকালে জানা গেছে, নৈশ প্রহরী তরিকুল ইসলাম ২০১৪ সাল হতে এ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের এক নারী অফিস সহায়কের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো, ঠিকমতো কর্তব্য পালন না করা, সিনিয়র -জুনিয়র নির্বিশেষে সহকর্মীদের সাথে যেনতেন কারনে দুর্ব্যবহার করা,অশালীন ভাষা ব্যবহার করা, হাসপাতালে বিভিন্ন সময় সংঘটিত নানা ধরনের চুরির ঘটনায় তার জড়িত থাকা, সম্প্রতি নৈশকালীন ডিউটিরত স্বাস্থ্য সহকারীর উপর সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাট সহ বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনায় তার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ইতিপূর্বে তিনি বিবাহিত এক নারীকে হাসপাতালের কোয়ার্টারে তার বাসায় এনে রাখলে সে ঘটনায় মামলা হয়।তিনি গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটেন।মামলাটি বর্তমানে রাজবাড়ীর আদালতে বিচারাধীন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলার পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ হাসনাত মতিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন সিভিল সার্জন। তদন্ত কমিটি তদন্ত সম্পন্ন করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী সিভিল সার্জনের নিকট রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।
অভিযোগকারীদের মধ্যে এক্সরে অপারেটর কামরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সহকারী সুলতান উদ্দিন আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম, পরিসংখ্যানবিদ নার্গিস খানমসহ কয়েকজন বলেন, তরিকুলের কারনে হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে একটা বাজে পরিবেশ বিরাজ করছে।তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার। অনতিবিলম্বে তার এখান থেকে বদলি ও বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া না হলে আমরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নৈশ প্রহরী তরিকুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো সত্য নয়। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু ষ্টাফ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। তাছাড়া তিনি বি,এ পাশ। কম্পিউটার এবং ড্রাইভিং করেতে জানেন বলে প্রায়ই অফিসের কাজে বড় স্যারদের সহযোগিতা করেন। এটাকেও তারা ভালভাবে নেয় না।আদালতের মামলাও নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ ইব্রাহিম টিটন জানান, তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্ট বিশ্লেষণ করা হচ্ছে । দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এম/এস