• বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
গোয়ালন্দে প্রাথমিক শিক্ষকদের নবীন বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দীঘিনালা উপজেলায় কর্মী ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত মানবতার সেবায় এগিয়ে এপেক্স ক্লাব অব বান্দরবান দু:স্থ অসহায় পাহাড়ি-বাঙালিদের মাঝে বিজিবি’র আর্থিক অনুদান রাজস্থলী স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি ছাড়া লক্ষ টাকার গাছ কাটার অভিযোগ নতুন ধান তোলা নিয়ে পাহাড়ে উৎসবের আমেজ পাহাড় জুড়ে সুবাস, কৃষকের মুখে হাসি অজপাড়াগাঁয়ের মেয়ে -খ্যাই উ প্রু মারমা পেলেন জননী  জয়িতা পুরস্কার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে চবি শিবিরের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়ি রিজিয়ন এর আয়োজনে সম্প্রীতির কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা  আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে রামগড়ে ছাত্রদলের মানববন্ধন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দীঘিনালা উপজেলা ছাত্রদল ও কলেজ ছাত্রদলের মানববন্ধন মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে উন্মুক্ত নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন

ভয়ংকর এক অপ-চিকিৎসকের হাতে মাগুরার রোগীরা অসহায়

মাগুরা প্রতিনিধিঃ / ৩০৯ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২

ভয়ংকর এক অপ-চিকিৎসকের হাতে মাগুরার জনজীবন”অভিযোগ উঠেছে ডাক্তার লাবনী আকবরের অপ-চিকিৎসা শিকার মাগুরাজেলার ভুক্তভোগী জনগণ। তবে তার অপ চিকিৎসার তথ্যচিত্র একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ও তাতে থেমে থাকেনি চিকিৎসা বাণিজ্য,বেড়েছে পঙ্গুত্তর পাশাপাশি মৃত্যুর হার। তার হাতে মৃতের সংখ্যা একাধিক। এক অনুসন্ধান দেখা গেছে,বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মাগুরা অপ চিকিৎসকদের উর্বরভূমিতে পরিণত হয়েছে। এই জেলাতে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের অভাবে জনস্বাস্থ্য সেবা রীতিমতো হুমকির মুখে দীর্ঘদিন। আনাড়ি কিছু চিকিৎসকরা নিছক পয়সার লোভে রোগীদের উপর সার্জারি প্র্যাকটিস করছেন প্রতিনিয়ত। এই আনাড়ি চিকিৎসকরা কেউ কেউ প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি অপারেশন করে খুব অল্প সময়ে কোটিপতি বনে যাচ্ছেন। একটি অপারেশনের জন্য তাদের বরাদ্দকৃত সময় মাত্র ৫ মিনিট থেকে ৭ মিনিট সাধারণ মানুষের জীবন এদের কাছে মূল্য হীন। এসকল অপ চিকিৎসকদের প্রয়োজন শুধু টাকা। এমনই একজন অপ-চিকিৎসক ডাঃ দিলারা আকবর লাবনী,সাম্প্রতিক একাধিক তথ্যসূত্রে জানা গেছে,অপ চিকিৎসার শিকার হয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ তুলছেন ভুক্তভোগীরা।

অপ চিকিৎসক দিলারা একবার লাবনী প্রেসক্রিপশন প্যাডে নিজের আবিষ্কৃত ভাষাতে ওষুধের নাম লিখে থাকেন। ওষুধের নাম কোন ফারমাসিস্ট বা রোগী বুঝতে না পারলেও প্রেসক্রিপশন এর একদম উপরে স্পষ্ট” ভাষায় লিখা দালালের” নাম সবাই বুঝতে পারেন। অনেক সময় ওষুধ বিক্রেতারা বিভ্রান্তিতে পড়ে দালাল এবং রোগীর ধরন অনুযায়ী ওষুধ দিয়ে দেন ক্রেতাদের হাতে। আর তাতে ঘটেছে বিভিন্ন ঘটনা। গত ২১শে সেপ্টেম্বর সকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লিনিক মালিক পক্ষ গণমাধ্যমকে বলেন, ডাক্তার লাবনী শতকরা ৮৫% দালালের উপর নির্ভর। দালালদের মধ্যে রয়েছেন,ক্লিনিক মালিক,কর্মচারী,পল্লী চিকিৎসক,ডাক্তার লাবনীর গেটম্যান ফরিদা,আবার কখনো এই দালালের তালিকায় দেখা গেছে ডাক্তার স্বয়ং নিজেই লাবনী আকবর।

সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আশা ভুক্তভোগী সাংবাদিক কর্মীর কাছে অভিযোগ তুলেন, রোগীর বক্তব্য পরিপূর্ণ না শুনেই রোগীকে লিখেদেন তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার পরীক্ষা নিরীক্ষা। যতবার রোগী উনাকে দেখাতে আসেন ততবার ই সুযোগ বুঝে আলট্রাসনোগ্রাম এবং বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়ে থাকেন আর এই আল্ট্রাসনোগ্রাম তিনি নিজেই করে থাকেন। ভুলবশত রোগী অন্য কোথাও থেকে আলট্রাসনোগ্রাম করে নিয়ে এলে রোগীকে ধমক দেন। অথচ্য ডাক্তারলাবনীর,আল্ট্রাসনোগ্রামের কোন ডিগ্রি নাই।তিন মাসের CMU আর্টাসনোগ্রাফি কোর্সে ভর্তি হলেও গত ছয় বছরে তার কোর্স শেষ হয়নি। ভর্তির পরে তিনি আর কোর্স শেষ করতে যাননি। এদিকে তিনি নিজের প্যাডে কন্টিনিউ লিখছেন” সিএমইউ,সি-আল্টা”।আর এ ভাবেই তিনি বিনা ডিগ্রিতে বছরের পর বছর হাজারো মানুষকে ভুল রিপোর্ট সহ পঙ্গুত্ব বরণ,মৃত্যু সহ নানান ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছেন।

বিশেষ করে গর্ভবতী বাচ্চার সঠিক ওজন,বয়স নির্ণয় করতে ভুল করে থাকেন। এমনকি রোগীর পেটের পানি কমে গেছে দ্রুত সিজার করতে হবে,না হলে বাচ্চা মারা যাবে এ ধরনের কথা বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এ সময় রোগী ভীতু হয়ে দ্রুত সিজারের ডিসিশন নিতে বাধ্য হন অনেকটা। অথচ্য রোগীদের এ সিজারিয়ান অপারেশনের কোন পূর্ব প্রস্তুতি থাকে না অনেকের। দেখা গেছে ভুল,আল্ট্রাসনোগ্রাফি নির্ধারিত সময়ের আগেই সিজার করানোর কারণে মহা ক্ষতির মধ্যে রোগীও নবজাতক। প্রসূতি মা জন্মদেন অ-পরিপক্ক বাচ্চা। আবার এদের মধ্যে জীবন বাঁচাতে কিছু রোগী মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। আর এ রোগীর সংখ্যাও পর্যায়ক্রমে কয়েকশত। মাগুরা সদর হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ডাক্তার লাবনীর হাতে সিজারের পর শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন একাধিক প্রসূতি মায়েরা। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, একটু ক্রিটিক্যাল মনে হলেই রোগীসহ বাচ্চাকে ভাড়াটিয়া অ্যাম্বুলেন্স এর মাধ্যমে গোপনীয় ভাবে ফরিদপুর বা ঢাকাতে পাঠান।এদের মধ্যে কেউ জীবিত ফিরে আসে, আর কেউ মৃত্যু হয়ে ফিরে আসে মাগুরা। মৃত্যু হলে প্রেসক্রিপশন এর ওপরে লেখা নামের দালালের” সমন্বয়ে ভুক্তভোগী রোগীর পরিবারকে টাকা দিয়ে দফারফা করে নেন গোপনে। এভাবে চলছে অনেক দিন।

একবার ভুল চিকিৎসায় বাচ্চার মৃত্যুর ঘটনা আড়াল করতে দ্রুতভাবে মৃত বাচ্চাকে রেফাট করেন ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে। প্রকাশিত হয়েছে অপ চিকিৎসার শিকার বাবু খালি ইউনিয়নের সিজারিয়ান রুগী আখির সন্তানের মৃত্যু।এবং হাজেরা খাতুনের বাচ্চার মৃত্যু তাছাড়াও একাধিক মৃত্যু ও পঙ্গুর ঘটনা। অভিযোগ সূত্রে সরজমিন পর্যালোচনায় মিলছে সত্যতা।

ভুল চিকিৎসায় নিউ আল বারাকা প্রাইভেট ক্লিনিকে এক প্রসূতি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে ডাঃ লাবনীর বিরুদ্ধে। মৃত প্রসূতি তিন কন্যা সন্তানের জননী রাশিদা বেগম (২৪) মাগুরা সদর উপজেলার খর্দ কছুন্দি গ্রামের রমজান শেখের স্ত্রী।এ ঘটনায় ১২ লক্ষ টাকায় দফারফা করেন ডাক্তার লাবনী। ভুক্তভোগী রশিদার পরিবার পান মাত্র তিন লক্ষ টাকা। বিপরীতে হারান দুটি তরতাজা প্রাণ! মৃতের লাশ বিক্রি করে পেট পুরে খেয়ে নেন দালাল সিন্ডিকেট।

নিহত রাশিদার বড় বোন শিল্পি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, তার ছোট বোন রাশিদা বেগম (২৪) সন্তান প্রসবের জন্যে শুক্রবার রাতে মাগুরা শহরের হাসপাতাল পাড়া এলাকায় নিউ আল বারাকা প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হয়। শনিবার রাতে চিকিৎসক দিলারা আকবর লাবনি ওই ক্লিনিকে রাশিদা বেগমের শরীরে অস্ত্রোপচার করেন। এ সময় একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয় রাশিদা। কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগে রক্তের প্রয়োজন হলে। প্রসূতির শরীরের রক্তের ক্রস ম্যাচিং না করেই শরীরে ‘ও’ পজেটিভ রক্তের পরিবর্তে ক্লিনিকের প্যাথলজি থেকে ‘এবি’ পজেটিভ রক্ত দেয়া হয়। এতে জন্মের পরপরই অসুস্থ হয়ে মারা যায় ওই নবজাতক। অন্যদিকে রক্তের ভুল ব্যবহারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রসূতি রাশিদা।ডাঃ লাবনীর শলাপরামর্শে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতি রাশিদা বেগমকে দ্রুত ঢাকার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

এম/এস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ