পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ লংগদু উপজেলা শাখার উদ্যোগে লংগদু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আঃ রশিদ সরকারের ৩৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কবর জিয়ারত ও দোয়া হয়েছে।
৪ঠা মে ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলাধীন লংগদু উপজেলার প্রথম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মোঃ আব্দুর রশিদ সরকারের ৩৫ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে লংগদু উপজেলার সকল মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া এবং বিকাল ৫.০০ ঘটিকায় উপজেলা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম সংলগ্ন কবরস্থানে শহীদের স্মরণে দোয়া ও কবর জিয়ারত করা হয়।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে দেখা ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইন্জিনিয়ারিং শাহাদাত ফরাজি সাকিব, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন, ছাত্র পরিষদের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন প্রমুখ।
এতে মরহুমের পরিবারের সদস্যগণ সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন লংগদু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাওলানা মোঃ আঃ মান্নান।
উল্লেখ্য যে, আজ থেকে ৩৪ বছর আগে এই দিনে রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু হয়ে ওঠে উত্তপ্ত। সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন শান্তিবাহিনী লংগদু উপজেলাই বসবাসরত নিরীহ এবং নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর নির্মম হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বিভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। ৩৮ হাজার বাঙালি হত্যাকারী, খুনি সন্তু লারমার আদেশে পাহাড়ে এই গণহত্যা পরিচালনা করে জেএসএস এর সামরিক শাখা শান্তিবাহিনী ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা। উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত বাঙালির সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজারেরও বেশি। কিন্তু পাহাড়ে সংগঠিত গণহত্যা সমূহের আজও কোনো বিচার মেলেনি। উপজাতি সন্ত্রাসীদের এসব নৃশংসতা প্রচার হয়নি বলে দুনিয়াব্যাপী এক তরফা ধারণা জন্মেছে যে, পার্বত্য উপজাতিরা সত্যিই নির্যাতনের শিকার কিন্তু বাস্তব ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীত। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, বাঙালিরা সর্বদা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতার পর থেকে জেএসএস তথা শান্তিবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু করে। এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পার্বত্যাঞ্চলের সহজ-সরল পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়ে শুরু করে সশস্ত্র তৎপরতা। প্রথম থেকেই তারা নিরাপত্তাবাহিনী এবং নিরীহ বাঙালিদের বিরুদ্ধে চালাতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। যে কোন নিরীহ এবং নিরস্ত্র মানুষের উপর সশস্ত্র আক্রমণ করাই যেখানে মানবতাবিরোধী চরম অপরাধ সেখানে শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরস্ত্র-নিরীহ বাঙালিদের উপর হাজার বার সশস্ত্র আক্রমণ পরিচালনা করেছে। শান্তিবাহিনী এ পর্যন্ত হত্যা করেছে ৩৫ হাজারেরও বেশি বাঙালি আবাল, বৃদ্ধ, বনিতাকে। এর মধ্যে লংগদু গণহত্যা ইতিহাসের পাতায় আজও চিরস্বরণীয়।
পার্বত্যকন্ঠ নিউজ/এমএস