আর কয়েক দিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে সামনে রেখে প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ফলে এরুটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে।
পাটুরিয়া ঘাট হয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে আসা ঘরেফেরা মানুষের পদচারণায় দীর্ঘদিন পর মুখরিত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট ও বাস টার্মিনাল এলাকা। বছর খানেক আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই নৌপথ ছিল ঢাকার সাথে যোগাযোগের অন্যতম নৌরুট। প্রতিদিন পদ্মা পাড়ি দিতো শত শত মানুষ ও পাঁচ থেকে ৬ হাজার যানবাহন। সেই সময় নদী পাড়ি দিতে এসে জ্যামে আটকা পরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে তাদের। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সুফলে ঈদ যাত্রায় দৌলতদিয়া ঘাটে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না ঘরেফেরা এসব মানুষ ও যানবাহনের।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতে সাধারণ যাত্রী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেল পার হচ্ছে। এ ছাড়া সময় যত বাড়ছে ততই ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে দৌলতদিয়া ঘাটে। তবে যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যের দিকে ছুটে যাচ্ছেন।
অপর দিকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আসা প্রতিটি লঞ্চেই দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। এসব যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নেমে বাস টার্মিনালে এসে বাস, মাইক্রোবাস, মাহিন্দ্রযোগে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা গেছে।
রাজধানী ছেড়ে আসা যাত্রীরা জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে এই পথে পাঁচ ছয় ঘন্টার আগে কখনো ফেরিতে উঠতে পারেননি। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে দূর্ভোগ কমেছে। এবার ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি ছাড়া তারা বাড়ি ফিরতে পারছেন।
দূর্ভোগ ছাড়া বাড়ী যাওয়াটা তাদের কাছে অনেক আনন্দের বলে জানান তারা।
এদিকে এবারের ঈদে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ২০টি ফেরি ও ২২ টি লঞ্চ চলাচল করবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে। সেইসাথে ঘাটকে যানজট মুক্ত রাখতে ঈদের আগে তিন দিন ও পরের তিন দিন সর্বমোট সাতদিন ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পরিবার পরিজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখো মানুষ যাতে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে সে জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রা পথে ভোগান্তি, যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, সড়কে যানজট নিরসন সহ ঘাট এলাকায় সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি করবে প্রশাসন।
বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২২টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। তবে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা মেনেই পারাপার করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মোহাম্মাদ সালাউদ্দিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে তবে ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহনগুলো নদী পার হতে পারছে। আশা করি এবার ঈদে যানজট মুক্ত যানবাহন ও ঘরমুখো মানুষ বাড়িতে পৌঁছাতে পারবে। বর্তমান তিনটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তিনটি ঘাটে রয়েছে ছয়টি পকেট। এই ছয় পকেটে ছয়টি ফেরি ভিড়তে পারবে। আশাকরি এবারের ঈদ যাত্রায় কোন ভোগান্তি হবেনা। আজ এনৌরুটে ছোট বড় মিলে ১৯ ফেরি চলাচল করছে।
রনি/পক