খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার চাকুরীচ্যুত সুপার মো. নাছির উদ্দীন খান আদালতের আদেশে কর্মস্থলে আবারও বিনা ছুটিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিতসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেছে।
০৫ মার্চ (রোববার) সুপার কর্মস্থলে যোগদান করতে আসলেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মূখে প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে সুপার মো. নাছির উদ্দীন খানকে!
প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকায় ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত “মানিকছড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা’র সুপার মো. নাছির উদ্দীন খান আর্থিক অনিয়মসহ নানা কারণে ২০০৯ সালের ১জুলাই কমিটির কর্তৃক চাকুরীচ্যুত হন। এর পর হতে সুপার পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অনেকে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও করা হলে চাকরীচ্যুত সুপার মো. নাছির উদ্দীন খান চাকরী ফিরে পেতে আইনের আশ্রয় নিয়ে আদালতের রায়ে গত ৩ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে পুনরায় কর্মস্থলে যোগদান করেন। এর পর ৪.০১.২৩-১৮.০১.২৩ পর্যন্ত ছুটি নিয়ে আর কর্মস্থলে ফিরে আসেনি!
গতকাল ৫ মার্চ রোববার সকালে হঠাৎ করে কর্মস্থলে সুপার আসার খবরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদমূখর হয়ে উঠে! সকাল ১০টার পর সুপার মাদরাসার সামনে আসামাত্র অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী সুপারের অফিসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এ সময় সুপারের বিরুদ্ধে পোস্টার ছাটিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা! খবর পেয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, শিক্ষাবিদ মে. আতিউল ইসলামসহ শিক্ষক,অভিভাবকেরা প্রতিষ্ঠানে জড়ো হন।
এ সময় শিক্ষার্থী (দাখিল পরীক্ষার্থী) মুসফিকা আফরিন তানমিন, মো. তকির আহমদ, মো.রাশেদুল ইসলাম,আচমা আক্তার, ৮ম শ্রেণীর মুরসালিন বিল্লাহ ও আশরাফুল হোসেনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল, শ্লোগান অব্যাহত রাখেন ।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ফারুক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আতিউল ইসলাম ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শোনেন এবং সুপার মো. নাছির উদ্দীন খানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে অন্যত্র বসে তদন্ত ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত সুপারকে মাদরাসায় যোগদানে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং শিক্ষার্থীর ক্লাসে ফিরে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সুপার মো. নাছির উদ্দীন খান প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মে জড়িত থাকায় চাকুরীচ্যুত হয়। প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত হওয়ায় পর আদালতের আদেশে চাকরীতে বহাল হয়ে আবারও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে অভিযোগ দাখিলসহ বিনা ছুটিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করছিল। এতে শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেছে। সহসাই মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভা এবং উপজেলার শীর্ষ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে সুপারের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সুপার মো. নাছির উদ্দীন খান বলেন, মাদরাসার সাবেক ও প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম আমাকে মাদরাসায় যেতে নিষেধ করেছিলেন! আজকের ঘটনায়ও তার ইন্দন রয়েছে। আমি বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
রনি/পক