• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
কেএনএফ’র সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রতিবাদ জানিয়েছে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রুমায় তুমুল গোলাগুলি আতঙ্ক, হতাহতের শঙ্কা বর্ণাঢ্য আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত মহালছড়িতে বৈসাবি ফুটবল টুর্নামেন্টে অংম্রাং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন বান্দরবানে জলবায়ু ধর্মঘট করেছে ইয়ুথনেট বান্দরবানে যৌথ অভিযানে গণগ্রেফতার ও হয়রানির প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে পিসিপির বিক্ষোভ মিছিল মানিকছড়িতে সাংগ্রাই উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা অনুষ্ঠিত সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রার্থীদের সবর উপস্থিতি অসাম্প্রদায়িক ও স্মার্ট জনপদ গড়ার অঙ্গীকার তীব্র দাবদাহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট পোল্ট্রি খামারে হাঁসফাঁস অবস্থা! খাগড়াছড়ি পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সম্মেলন ২০ এপ্রিল

আগামী নির্বাচনে জেতানোর দায়িত্ব নিতে পারবো না : শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক(ঢাকা): / ২৪১ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : রবিবার, ৮ মে, ২০২২

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের কোনো সংসদ সদস্যকে জেতানোর দায়িত্ব নিতে পারবো না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৭ মে) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তিনি এমনটা জানিয়েছেন বলে সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত নির্বাচন নিয়ে এখনও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাকে জবাব দিতে হয়। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও কঠিন হবে। যোগ্য প্রার্থী বেছে নিতে সারা দেশে জরিপ চলছে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় সভা। দীর্ঘ বৈঠক শেষে রাত ১১টা ৫ মিনিটের দিকে একের পর নেতা বেরিয়ে আসেন সভাস্থল থেকে।

রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সারাদেশে ইভিএমে হবে। ফলে বিকল্প উপায়ে ভোটে জিতে যাওয়ার চিন্তা কারও করার সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে দলটির একাধিক নেতা এ সব কথা জানান।

দলের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি বৈঠকে পরিষ্কার হতে চাইলে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবকিছুই কঠিন থেকে কঠিনতর হবে এবার। বিএনপি নেতা তারেক রহমান এবার রমজানে ওয়ার্ড নেতাদের সঙ্গেও ভার্চুয়ালি সভা করেছে। পশ্চিমা দেশে অন্তত ৫০টি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়েছে। তারা কিন্তু চুপ করে বসে নেই ‘ শেখ হাসিনা বলেন, ‘দল গোছাতে হবে। সর্বস্তরে সম্মেলন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। সম্মেলন যথা সময়েই হবে।’

সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য ১৪ দলীয় জোটে থাকা ছোট দলগুলো যারা অনেকটাই অস্তিত্বহীন, তাদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাখার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জোট থাকবে। ওই নেতা সহযোগী সংগঠনের ব্যাপারটি আলোচনায় টেনে আনলেও দলীয় সভাপতি এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেননি।’

বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ বিভাগের প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে গেলে কিছুটা হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল তার সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময়ে প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে বক্তব্য দেন, আগে যখন বিমানে সফর করতাম তখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাতে অন্ধকার দেখাত। এখন বিমান ভ্রমণে যখন যাই, নিচে সবই আলোয় পরিপূর্ণ দেখতে পাই।

ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কী সাংগঠনিক প্রতিবেদনের অংশ? এরপর অপর সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘আমার বিভাগে দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অনেক নেতা। আমরা ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি, আপনার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী অনেকটা রসাত্মক ভঙ্গিতে তার কাছেও জানতে চান, এটাও কি সাংগঠনিক প্রতিবেদন?

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় সংক্ষিপ্ত করলে দলীয় সভাপতি বলেন, ‘তোমার বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে শুরু করে কক্সবাজার পর্যন্ত। তোমার সময় এত কম কেন?’ অবশ্য স্বপন এরপর বক্তব্য খানিকটা দীর্ঘায়িত করেন।

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তোমার প্রতিবেদন তো রমেশ চন্দ্র সেন দাদা বলেই দিয়েছে। তুমি বস।

জানা গেছে, বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের রিপোর্ট পেশ করেন। সেখানে তারা তৃণমূলের সম্মেলন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদাতাদের বিষয়টি উপস্থাপন করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি সিদ্ধান্ত দেন, যে সব সাংগঠনিক শাখায় এখনও সম্মেলনে হয়নি, সেই শাখার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যারা বিরোধিতা করেছেন তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য। তবে তার আগে তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, ‘যদি কোনো সাংগঠনিক শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার অভিযোগ ওঠে, তাদের সম্মেলনে কার্যক্রম থেকে সরিয়ে দিতে নির্দেশনা দেন। এ ক্ষেত্রে প্রস্তুতি কমিটি করে করে সম্মেলনে শেষ করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য সচিবালয়ের ভেতরে শ্রম মন্ত্রণালয়ে শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক একটি সংগঠনের অফিস রয়েছে জানিয়ে বলেন, এটা ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কেন সচিবালয়ে থাকবে? শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। আমি তো দাওয়াতই পাই না।’

সূত্রে জানা গেছে, দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে তৃণমূলের আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সমন্বয়ের কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হচ্ছে, কিন্তু সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সম্মেলন হচ্ছে না, এতে আমাদের তৃণমূলের সব সংগঠনকে নিয়ে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে।’

এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিভাগওয়ারি আটটি কমিটি রয়েছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পাশাপাশি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সম্মেলনের বিষয়েও তারা দেখভাল করবেন।’

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, দলীয় সভাপতি তার বক্তব্যে নির্ধারিত সময়ে জাতীয় সম্মেলনের কথা বললেও সম্মেলনের তারিখ কিংবা সম্মেলনকে ঘিরে উপ-কমিটির বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা দেননি। এতে করে কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ