• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বান্দরবানে ট্রাক লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীদের গুলি সাজেকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছে সেনাবাহিনী খাগড়াছড়িতে উপজেলা নির্বাচনে প্রচারণা তুঙ্গে, সদ্য দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ারা নির্ভার! রামগড় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ পেলেন যারা কেএনএফের সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে ছাত্রলীগের সভাপতি সহ ৭ জন কারাগারে অবৈধ দখলদার হতে ময়লা ডাম্পিং ও সেড নির্মাণের জায়গা উদ্ধারে মানববন্ধন কাপ্তাই উপজেলা সদরে হাঁসের খামারে ধরা পড়লো ১৪ ফুট লম্বা অজগর : কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত  কাপ্তাই লেকে পানি স্বল্পতায় কাপ্তাই-  বিলাইছড়ি নৌ রুটে  নৌ চলাচল ব্যাহত বান্দরবানের রুমায় সেনা অভিযানে কেএনএ সন্ত্রাসী নিহত খাগড়াছড়ি জেলা পু‌লিশের সকল স্ত‌রে শ্রেষ্ঠ হয়েছে মাটিরাঙ্গা সা‌র্কেল ও থানা

সন্ত্রাসী হামলায় আহত রমজান আলীর পাশে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ

স্টাফ রিপোর্টার / ৭১৫ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : রবিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২১

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার তবলছড়িতে ফের নিজ জমিতে সবজি চাষাবাদের সময় পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা বন্দুক এর নলের আঘাতে ১জনকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে।

শনিবার (১০এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার তবলছড়ি-তাইন্দং এর শুকনাছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫জন কৃষক সবজি চাষাবাদের জন্য নিজ জমিতে যাওয়ার পর ৪জন কৃষক কৃষি সরঞ্জামাদী আনতে যায়। এ সুযোগে ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ আলির ছেলে রমজান আলীকে একা পেয়ে ২০/২৫জন পাহাড়ী সন্ত্রাসী চতুর্দিক থেকে ঘেরাও করে বন্দুক এর নল ও লাঠি দ্বারা মাথা, মাজা ও পিঠসহ সারা শরীরে মারাত্মকভাবে আঘাত করে।

একপর্যায়ে রমজান আলীর মৃত্যু হয়েছে ভেবে সেখান থেকে দ্রুত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে সকাল ১১টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

হাসপাতালে আহত রমজান আলীকে দেখতে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আইনজীবি ফোরামের সভাপতি ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি এড. ইয়াকুব আলী চৌধুরী, বাঙালি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহীম মনির, সাধারণ সম্পাদক মো.ছাদেকুর রহমান, শাহ আলম, শাহাবুদ্দিন, শহীদুল ইসলাম প্রমূখ।

এসময় এড. ইয়াকুব আলী চৌধুরী বলেন, গত ৪এপ্রিল থেকে নিরীহ বাঙালি কৃষকদের উপর পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে আসছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য অবিলম্বে লাইসাপাড়া এলাকায় ১টি নিরাপত্তা(বিজিবি) ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।

সম্প্রতি মাটিরাঙায় বাঙালিদের ওপর ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলার পর (৬ এপ্রিল) পাহাড়ে সবাইকে মিলেমিশে থাকার তাগিদ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি বলেন, পাহাড়ে যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায়, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পাহাড়ে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সাম্প্রদায়িক চেতনাকে উপেক্ষা করে পাহাড়ি-বাঙালি মিলেমিশে বসবাস করতে হবে।

বাঙালিদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসময়, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস,
গুঁইমারা রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী এবং খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ এলাকা পরিদর্শনে যান।

কী ঘটেছে গত কয়েকদিন

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ৪এপ্রিল আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। জেলার মাটিরাঙা উপজেলার লাইফুকারবারি পাড়া এলাকায় নিজেদের কচু ক্ষেতে কাজ করছিলেন ২০-২৫জন বাঙালি। হঠাৎ ১২-১৫জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের ঘেরাও করে মারধর শুরু করেন এবং ১৫-২০রাউন্ড ফাকা গুলি চালিয়ে ভয় দেখান। ওই ঘটনায় ২জন বাঙালি গুলিবিদ্ধসহ ৫জন গুরুতর আহত হন।

খবর পেয়ে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

পরে ৫এপ্রিল সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে আবার বাঙালি গ্রামে প্রবেশ করে তাদের বেধড়ক মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয় সন্ত্রাসীরা।

একইদিন রাত ৯টার দিকে পুনরায় আরেকটি বাঙালি গ্রামে ৫০-৬০জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হানা দেয় এবং মারধর ও ঘরবাড়ি হতে বের করে দেয়।

পরে এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে মুসলিমপাড়া, ইসলামপুর, শুকনাছড়িসহ আশপাশের গ্রাম থেকে বাঙালিরা একত্রিত হয় তাইন্দং বাজারে উপস্থিত হন। বাঙালিরা একত্রিত হয়ে ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

রাতে মুসলিমপাড়ার পংবাড়ি এলাকার বাঙালি মফিজ মিয়ার দখলকৃত সেগুন বাগানের ৩শতাধিক সেগুন গাছ কেটে ফেলে সন্ত্রাসীরা। একই রাতে আনু মিয়ার চায়ের দোকান পুড়িয়ে দেয় তারা।

১৯৯৭সালের ২ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫০টি সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের ফলে পাহাড়ে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ে বর্তমানে নিরাপত্তা সংকট তৈরি হয়েছে।

শান্তি-প্রিয় মানুষ ওই এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অচিরেই ১টি নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ