• শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিতে যৌনকর্মীদের নিয়ে সচেতনতামুলক সভা অনুষ্ঠিত জনসেবাই জনপ্রশাসন- বাক্যটির বাস্তব উদাহরণ যেন ইউএনও -রাজীব চৌধুরী কুমিল্লার ১১টি আসনে ১২১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা রাঙামাটি ইউনিট’র বার্ষিক সাধারণ সভা ও ইউনিট কার্যনিবাহী কমিটির নির্বাচন-২০২৩ অনুষ্ঠিত পার্বত্য চুক্তিতে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ধারা সংশোধনের দাবি পিসিসিপি’র নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ৩০ দল, এমপি হতে চান ২৭৪১ জন নৌকার প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বকুল মহালছড়িতে প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ধানবীজ বিতরণ সকলের কল্যানে সেনাবাহিনী ও আনসার ব্যাটালিয়ন একই সাথে কাজ করছে…লেঃ কর্ণেল হিমেল বান্দরবানে ৩০০নং আসনে তিন প্রার্থীর মনোনয়ন জমা

রত্নাংকুর বন বিহারে দু’দিন ব্যাপি কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত

মাহাদী বিন সুলতান, নানিয়ারচর প্রতিনিধি: / ৪৯৪ জন পড়েছেন
প্রকাশিত : শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২১

গৌতম বুদ্ধের প্রধান সেবিকা মহাপুণ্যবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত নিয়মে রাঙামাটির নানিয়ারচরে শুভ দানোত্তম ২৪তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে নানিয়ারচরের রত্নাংকুর বন বিহারে দু’দিন ব্যাপি কঠিন চীবর দান, বুদ্ধমূর্তী দান, অষ্টপরিষ্কার দানসহ স্বর্ণের মেডেলের মাধ্যমে ২০৭’ফুট উচ্চতার বুদ্ধমূর্তীর প্রতিচ্ছবি অধিষ্ঠান গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।

২৮শে অক্টোবর শুরু হওয়া ২দিন ব্যাপী চীবর দান অনুষ্ঠানে রত্নাংকুর বন বিহারে বেইন ঘরের শুভ উদ্বোধন করেন, ফুরোমোন আন্তর্জাতিক বন ভাবনা কেন্দ্রের বিহার অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভৃগু মহাস্থবির।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন,
নানিয়ারচর জোন কমান্ডার লেফটেনেন্ট কর্ণেল এসএম রুবাইয়াত হুসাইন (পিএসসি),
আর্য্যপুর বন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভদজ্জী মহাস্থবির, রত্নাংকুর বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির, রাজবন বিহার থেকে আমন্ত্রিত শ্রীমৎ সত্যপ্রেম মহাস্থবির, শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির, দেবানন্দ মহাস্থবিরসহ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ইলিপন চাকমা, থানার অফিসার ইনচার্জ সুজন হালাদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ দর্শন চাকমা ঝন্টু, বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কমল কান্তি দেওয়ান ও দায়ক-দায়ীকাসহ হাজারো পূর্ণ্যার্থীবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিখিল কুমার বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে মানব জীবন তৃপ্তি লাভ করতে পারে। আজ ২০৭’ফুট উচ্চতার বুদ্ধমূর্তী নির্মাণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিচ্ছবিতে স্বর্ণের মেডেল প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ বৌদ্ধ ধর্ম সংঘের পাশে থাকবে।

বক্তব্যে বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির ভান্তে বলেন, দানোত্তম কঠিন চীবর দান আপনাদের কায়িক, বাসনীক ও আর্থিক সহায়তায় সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা, হাসপাতাল, লাইব্রেরী, পালী কলেজসহ বনভান্তের অনেক স্বপ্ন ছিল। সকলের দান ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। শেখ হদাসিনা

অনুষ্ঠানে বুদ্ধের অমৃতবানী স্বধর্ম দেশনা প্রদান করা হয় এবং ভিক্ষু সংঘের অধ্যক্ষগন দেব মনুষ্য হিতসুখ মঙ্গল কামনায় করনীয় মৈত্রী সুত্র পাঠ করেন। এসময় ২০৭’ফুট উচ্চতার বুদ্ধমূর্তীর জন্য ক্রয়কৃত স্বর্ণের মেডেল দানকারী অভিজিৎ এর জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়।

এর আগে প্রধান অতিথি নিখিল কুমার কে বিহার প্রাঙ্গন থেকে ঐতিহ্যবাহী রাজকীয় পোশাক পরিয়ে হাতির পিঠে করে মঞ্চে আনা হয়।

বিহার সূত্রে জানা যায়, রাত ব্যাপি (২৪ঘণ্টায়) চরকায় সূতা কাটা, রঙ করা, বেইন বুনন ও শেষে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করাই হল কঠিন চীবর দান। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই পোশাক বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে দেয়া হয়। এই পোশাক তৈরি করার জন্য প্রস্তুতিস্বরূপ প্রথমে তুলার বীজ বোনা হয়, পরে তুলা সংগ্রহ করা হয়, তা থেকে সুতা কাটা হয়, সেই সুতায় রং করা হয় গাছ-গাছড়ার ছাল বা ফল থেকে তৈরি রং দিয়ে, এবং সবশেষে নানা আচার-অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে মাত্র ২৪ ঘণ্টায়, অর্থাৎ এক দিনের ভিতর তৈরি করা হয় এই ত্রি-চীবর। এই পোশাক বোনায় ব্যবহার করা হয় বেইন বা কাপড় বোনার বাঁশে তৈরি ফ্রেম। এরকম বেইনে একসঙ্গে চারজন কাপড় বুনে থাকেন। এভাবে ২৪ ঘণ্টা পর তৈরি হওয়া সেসব চীবর, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

কঠোর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে চীবর দেয়া হলে কায়িক-বাচনিক ও মানসিক পরিশ্রম বেশি ফলদায়ক হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ